নন্দীগ্রাম আমার প্রাণ। আমি কীভাবে ভুলব নন্দীগ্রামকে। আন্দোলনকে কি কখনও ভোলা যায়? নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুধু তাই নয়, একেবারে নাম না করে খোলা চ্যালেঞ্জ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ কেউ একটু ইধার উধার করছে। তবে এই নিয়ে কেউ বিশেষ চিন্তা করবেন না। এরপরেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আগে তো সুপ্রকাশ গিরির সঙ্গে লড়, তারপর তৃণমূল কংগ্রেসকে লড়বে।
একই সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, কেউ কেউ যেতেই পারে। সেই স্বাধীনতা সবার দেওয়া রয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে তিন ধরনের লোক হয়, একদল লোভী, একদল ভোগী, আর একদল ত্যাগী। যারা ত্যাগ করতে জানে তারা কোথাও যাবে না। আর একদলের প্রচুর সম্পত্তি, প্রচুর টাকা। সেই টাকা রক্ষা করতে তারা দল ছাড়ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি নেতারা বলছে, হয় জেলে নয় ঘরে। তৃণমূল করলে জেলে ভরব, বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। কালো হয়ে ঢুকবে, সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে। কটাক্ষ নেত্রীর। নাম না করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, আমি অনেকটা জানতাম না। টাকা দিতাম, কিন্তু কাজ করত অন্য লোক। এবার আমি নিজে দেখব। কথা দিলাম। আপনাদের কাজগুলি করব।
উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে আজ সোমবার কার্যত মাষ্টারস্ট্রোক দিয়েছেন মমতা! নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা ভোটে লড়বেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এমনটাই জানালেন নেত্রী। আর তাঁর মন্তব্যে কার্যত দলের পক্ষ থেকে শিলমোহর দিলেন সুব্রত বক্সি। তৃণমূল নেত্রীর এহেন ঘোষণার পরেই স্লোগান উঠতে থাকে। পালটা জানান, আজ নন্দীগ্রামে আরও একবার জন্ম হল তৃণমূলে।
দীর্ঘদিন পর আজ সোমবার নন্দীগ্রামে পা রাখেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। তৃণমূল সুপ্রিমো জানান, নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মার টান। তাই নিজের উত্থানস্থল থেকেই একুশের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে চান তিনি।
মমতা আরও বলেন, নন্দীগ্রামে তাঁর কাছে লাকি! কারণ গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই প্রথম ভোটের বাদ্যি বাজিয়ছিলেন। জিতেও ছিলেন। আর তাই এবারও নন্দীগ্রাম থেকেই ভোটের প্রার্থী ঘোষণা কথা বলতে শুরু করেন নেত্রী!
আর তা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এবারে নন্দীগ্রামে এমন কাউকে প্রার্থী করব ভাবছি, যে আপনাদের কাছে পড়ে থেকে আপনাদের কাজ করবে। ভাল কাউকেই প্রার্থী করব। ভাবছিলাম, আমি নিজেই যদি দাঁড়ায় তাহলে কেমন হয়? একটু গ্রামের জায়গা, আমার মনের জায়গা, আমি হয়তো ভোটের আগে বেশি আসতে পারব না। আমাকে ২৯৪ আসনেই লড়তে হবে। আপনারাই সব করে দেবেন। ভোটের পরে যা করার আমি করব। নন্দীগ্রামের সঙ্গে আমার আত্মার টান। নিজের বিবেক থেকেই বলছি।
এরপরই স্পষ্ট করে মমতা জানিয়ে দেন, আমি আমার দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে বলব নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হিসেবে যেন আমার নামটা রাখা হয়। আমি নন্দীগ্রামের মানুষের মধ্যে থেকে আপনাদের জন্য কাজ করতে চায়।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্য একাত্মতার বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এমন দল কোথাও দেখেছেন? আমি ভালবাসার টানে আর নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলাম না।” তবে, নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়ালেও ভবানীপুর কেন্দ্রও ছাড়ছেন না মুখ্যমনন্ত্রী।
Be the first to comment