আন্দোলনকারীদের চাপে আরজি করের অধ্যক্ষর পদত্যাগ, যদিও স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বললেন অধ্যক্ষ

Spread the love

 

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে এবার পদত্যাগ করলেন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ। জুনিয়র চিকিৎসকদের লাগতার আন্দোলনের চাপেই কি সোমবার সকালে পদত্যাগ করলেন অধ্যক্ষ? যদিও অধ্যক্ষ জানান এদিন জানান, কারও চাপে নয়, স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে অধ্যক্ষের এই ইস্তফার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রী এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, লিখিত আকারে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে সন্দীপকে। মুখের কথায় তাঁরা পদত্যাগ মানতে নারাজ।
প্রসঙ্গত, অবিলম্বে সুপার এবং প্রিন্সিপালের পদত্যাগের দাবি তুলেছিল আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তারপরই রবিবার স্বাস্থ্যদফতরের পক্ষ থেকে অপসারিত করা হয় সুপারকে, এরপর সোমবার পদত্যাগ করলেন আরজি কর হাসপাতালের প্রিন্সিপাল। এদিন সকালে ইস্তফা ঘোষণা করে সোমবার সাংবাদিকদের সামনে সন্দীপ বলেন, ‘‘আমার ইস্তফাই ছাত্রছাত্রীদের কাম্য ছিল। সারা রাজ্যের এটাই কাম্য ছিল বলে আমার মনে হয়েছে। আশা করব, এ বার ছাত্রছাত্রী এবং জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজে ফিরবেন। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন মাধ্যমে আমি যে কটূক্তি সহ্য করেছি, আমার পরিবার, সন্তানেরা যা সহ্য করেছে, তাতে বাবা হিসাবে আমি লজ্জিত। তাই আমি পদত্যাগ করলাম। আশা করি আপনারা ভাল থাকবেন।’’ এদিন তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মুখে কথা বসিয়ে রাজনীতির খেলা চলছে। বিরুদ্ধ গোষ্ঠী এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক খেলায় নেমেছে। আমি কোনও দিন এ সব খেলা খেলিনি। আমি সরকারি কর্মচারী। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করব। আশা করব, ছাত্রছাত্রীরা শীগ্রই কাজে যোগ দেবেন।’’
অধ্যক্ষের পদত্যাগের খবর পেয়ে আন্দোলনকারীদের এক জন বলেন, ‘‘মুখের কথায় আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের লিখিত চাই। সব দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। কারণ, সুপার বা অধ্যক্ষের পদত্যাগ আমাদের একমাত্র দাবি ছিল না।’’
এদিন তিনি নাম না করে হাসপাতালেরই একদল চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। “ডাক্তারদের মধ্যেও চোর, ডাকাত রয়েছে। আমি অর্থোপেডিক সার্জেন। আমি খেটে খেতে পারব। সকলে ভেবেছিল সন্দীপ ঘোষ পদত্যাগ করতে পারেন না। আমি সৎ ব্যক্তি। আর জি করের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকের টাকা খাওয়া বন্ধ করেছিলাম। আগে হাসপাতাল থেকে ডেথ বা বার্থ সার্টিফিকেটের জন্য আগে পয়সা দিতে হত। আমি এসব বন্ধ করেছি। এখন আর দিতে হয় না। যতদূর পেরেছি হাসপাতালের উন্নয়নে, রোগীদের স্বার্থে করেছি।”
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে পড়ুয়াদের। তিনি পদত্যাগ না করলে হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়া যে সম্ভব নয়, তা মোটের উপর নিশ্চিত ছিল। রবিবার রাতে অধ্যক্ষকে নাকি সাফ জানানোই হয়েছিল যে হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক ও আর জি করের হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনতে তাঁকে পদত্যাগ করতেই হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মুখে স্বেচ্ছায় বলে দাবি করলেও, এই পদত্যাগ চাপের মুখে নতিস্বীকার ছাড়া আর কিছুই নয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*