আরজি কর কাণ্ডে সিবিআইয়ের ভরসা উন্নাও হাথরস তদন্তের দুই দুঁদে মহিলা অফিসার

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

গত ১৩ আগষ্ট কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আরজি কর কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেয় সিবিআইয়ের হাতে। তারপরই দিল্লি থেকে এই ঘটনার তদন্ত করতে কয়েকজন সিবিআইয়ের আধিকারিক আসেন কলকাতায়।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভরসা দুই দুঁদে মহিলা আইপিএস অফিসারের অপরই। সামগ্রিক তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন হাথরসের ধর্ষণ-খুন এবং উন্নাওয়ের ধর্ষণের মামলা তদন্তকারী অফিসার সম্পত মীনা। এবার সোমবার এই মামলায় অফিসার সম্পত মীনাকে সঙ্গ দিতে যোগ দিলেন উত্তরপ্রদেশের হাথরস ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তকারী সিবিআই অফিসার সীমা পাহুজা। এবার আরজি করের ঘটনার তদন্ত করবেন সিবিআইয়ের দুই মহিলা অফিসার।
জানা যাচ্ছে, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর সম্পত মীনার নেতৃত্বাধীন ২৫ জনের টিম বর্তমানে আরজি করের ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে নজরদারি চালাচ্ছে এই টিম। আর গ্রাউন্ড স্তরে তদন্ত করছে সীমা পাহুজার দল।
ইতিমধ্যেই, আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ওই মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে চার বার জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। যদিও সিবিআইয়ের হাতে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি। তার মধ্যেই জানা গেল, হাথরসের ঘটনায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলের নেতৃত্ব দেওয়া তৎকালীন ডিএসপি সীমা পাহুজাকে আরজি করের ঘটনার তদন্তকারী দলে যুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সিবিআই আধিকারিক সীমা এক সময়ে গাজিয়াবাদে কর্মরত ছিলেন তদন্তকারী সংস্থার অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরোয়। হাথরস তো বটেই, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অন্দরে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। সিবিআই আধিকারিক হিসাবে তাঁর কাজের জন্য ২০১৪ সালের ১৫ অগস্ট পুলিশ মেডেল পান সীমা। সাহসী এবং নির্ভীক অফিসার হিসাবে পরিচিতি রয়েছে সীমার।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উচ্চবর্ণের চার জনের লালসার শিকার হতে হয়েছিল হাথরসের ১৯ বছরের দলিত তরুণীকে। উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তি দলিত তরুণীটিকে গণধর্ষণের পর একটি মাঠে ফেলে পালায়। বাড়ির লোকেরা যখন তরুণীকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করেন, তখন তাঁর কাঁধ ও গোপনাঙ্গে ভয়ানক আঘাত। ১১ দিন লড়ে শেষ পর্যন্ত দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় হাথরসের দলিত তরুণীর। মৃত্যুর পর তরুণীর দেহ একটি অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিবারের হাতে তুলে না দিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও সরকারি কর্তাদের উপস্থিতিতে রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দেওয়া হয় নির্যাতিতা তরুণীর মৃতদেহ। এরপরই এই তোলপাড় পড়ে যায় সারা দেশে। এরপর ওই তদন্তের ভার পরে সিবিআইয়ের উপর, সেই তদন্তে সিবিআইয়ের ১৪ সদস্যের বিশেষ দলের নেতৃত্ব দেওয়া ছাড়াও হিমাচল প্রদেশের গুড়িয়া মামলার তদন্তের ভার ছিল সীমার উপরে। সংশ্লিষ্ট মামলার সমাধান করেছিলেন তিনি।
পাশাপাশি, এই সীমা পাহুজাই হিমাচলপ্রদেশের দশম শ্রেণির ছাত্রীর গুড়িয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কিনারা করেছিলেন। একটি ব্লাইন্ড কেস অনায়াসে সমাধান করে বাহবা কুড়োন এই দুদে অফিসার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*