রবিবার নন্দীগ্রাম দিবসে রাজপথে নেমে নিজেকে আহত বাঘের সঙ্গে তুলনা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর, খেলা হবে।” পায়ে চোট, তবু ময়দানে ‘লড়াকু’ তৃণমূল সুপ্রিমো। রবিবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত এক মিছিলের আয়োজন করে তৃণমূল কংগ্রেস। হুইল চেয়ারে বসে সেই মিছিলে নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী।
হুইল চেয়ারে বসেই এদিন মমতার হুঁশিয়ারি, “আহত বাঘ কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর। আমাকে আহত করা হয়েছে। আমি হুইল চেয়ারে ভাঙা পায়ে সারা বাংলা ঘুরে বেড়াব। আমার যন্ত্রণা আছে, শারীরিক যন্ত্রণা। কিন্তু গণতন্ত্রের যন্ত্রণা অনেক বড়। আমার সারা শরীরে কালো চিহ্ন। কিন্তু আমি তোয়াক্কা করি না। স্বৈরাচারী শক্তির হাত থেকে আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করাই একমাত্র কাজ। অশুভ শক্তি যেন নাশ হয়। বাংলাকে ঘিরে যে চক্রান্ত, তা যেন নস্যাৎ হয়ে যায়। আমাকে ভরসা রাখুন।”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলার স্বর ছিল অনেকটাই দুর্বল। চোখে মুখেও সে ছাপ স্পষ্ট। তবে শরীর যতই খারাপ থাকুক না কেন, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য তিনি লড়াই করে যাবেন বলেই জানান। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “এমনিতেই আমার ৫-৬ দিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে আমি এটুকুই বলব, আমার জীবনে অনেক আঘাত প্রত্যাঘাত দেখেছি। লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই এগিয়ে গিয়েছি। এখন যন্ত্রণা রয়েছে ঠিকই। ১৫ দিন বেড রেস্ট বলেছিলেন ডাক্তাররা। কিন্তু তা করলে বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছবে কে। এমনটা হলে তো যারা পরিকল্পনা করে, চক্রান্ত করে, ওরা সফল হয়ে যাবে।”
গত বুধবারই নন্দীগ্রামে পায়ে চোট পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বাড়ি ফিরে গেলেও কড়া নিয়মে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। আপাতত হুইল চেয়ারই তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গী। রবিবার মিছিলে সেই ‘বাহনে’ই সওয়ার হতে দেখা গেল তাঁকে। বিশেষ এই হুইল চেয়ারের রং নীল-সাদা। পা যেহেতু তিনি ঝুলিয়ে রাখতে পারবেন না, তাই রয়েছে বিশেষ ফুট বোর্ড। পায়েও বিশেষ প্লাস্টার স্যান্ডেল। সাধারণত হুইল চেয়ারের পিছনের দিকে যে চাকা দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর হুইল চেয়ারের চাকা তার থেকে কিছুটা আলাদা।
রোড শো শুরুর আগে একটি টুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লড়াই যে আরও জোরাল হবে, টুইটে সে বার্তাই। মমতা লেখেন, ‘আমাদের লড়াই হবে আরও দৃঢ়। এখনও আমার পায়ে ব্যথা রয়েছে। তবে মানুষের ব্যথা আমার যন্ত্রণার থেকে অনেক বেশি। আমাদের প্রিয় ভূমিকে রক্ষা করতে হবে। আমরা অনেক সহ্য করেছি। হয়তো আরও সহ্য় করতে হবে। তবে কোনওদিন আমরা ভীরুর মতো পিছু হঠব না।’
এদিন কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
শুনুন!
Be the first to comment