চিরন্তন ব্যানার্জি :- রাজ্যের একাধিক বিল আটকে রেখেছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেই মর্মে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় এবার রাজভবনকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। নোটিস জারি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জন্যও।
উল্লেখ্য, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল। সংবিধানের রক্ষাকবচ রয়েছে তাঁর সাথে। সেই কারণে রাজ্য সরকার সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেনি। মামলাটি করা হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সচিবের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। যদিও মৌখিক ভাবে রাজ্যপালকেই নোটিস দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
সরকারের দাবি, কোনও কারণ না দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালরা আটটি বিল আটকে রেখে দিয়েছেন। বাংলার তরফে হাজির হওয়া বরিষ্ঠ কৌঁসুলি অভিষেক মনু সিংভি বলেন, রাজ্যপাল রাজ্যের বিল কী করে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করতে পারেন? তিনি সম্প্রতি তামিলনাড়ু সরকারের একই ধরনের আবেদনের দৃষ্টান্ত তুলে সর্বোচ্চ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সিংভি বলেন, সেক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্ট পদক্ষেপ করায় রাজ্যপাল সব বিল ছেড়ে দিয়েছিলেন। এটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন সিংভি।
রাজ্য বিধানসভায় যে বিলগুলি পাশ করা হয়, রাজ্যপালের সম্মতি পেলে তা আইনে পরিণত হতে পারে। সেই কারণে বিল স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হয় রাজভবনে। কিন্তু রাজ্যের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে প্রচুর বিল রাজভবনে জমে রয়েছে। রাজ্যপাল তাতে সম্মতি দেননি। কোনও বিল নিয়ে রাজ্যপাল নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তাঁর দু’টি করণীয় থাকে। বিলটি সিদ্ধান্তের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো অথবা বিল সংশোধনের জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠানো। এ ক্ষেত্রে রাজভবন থেকে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্যপাল নিজেও সিদ্ধান্ত নিয়ে বিলে স্বাক্ষর করেননি। আবার বিলগুলি রাষ্ট্রপতির কাছে বা সংশোধনের জন্য বিধানসভাতেও পাঠাননি। এ ভাবে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল দীর্ঘ দিন রাজভবন ফেলে রাখতে পারে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানান, তাঁরা রাজভবন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে এ বিষয়ে নোটিস জারি করছেন।
প্রসঙ্গত, শুধু রাজ্যই নয়, কেরল সরকারও এই একই অভিযোগে আর্জি জানিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতে। দুই সরকারেরই আবেদন শুনে এদিন কেন্দ্র ও রাজ্যপালদের সচিবদের নোটিস দিয়েছে আদালত। কেরলের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কেকে বেণুগোপাল বলেন, রাজ্যপাল যে বিলগুলিকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন, সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করছে রাজ্য সরকার।
Be the first to comment