এবার বাংলা ভাগের সুর ঝাড়খণ্ডের সাংসদ নিশিকান্ত দুবের গলায়

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি :- ফের বাংলাকে ভাগ করা নিয়ে জোড়ালো সওয়াল বিজেপি সাংসদের। তবে এবার রাজ্য বিজেপির কোনও সাংসদ না, লোকসভায় সাওয়াল করলেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। বৃহস্পতিবার লোকসভায় প্রস্তাব আনেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের সাংসদ বলেন, ‘জনবিন্যাসের ভারসাম্য’ বজায় রাখার কারণ দেখিয়ে বাংলার মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে বিহারের কিষাণগঞ্জ, অরারিয়া এবং কাটিহার জেলাকেও ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অন্তর্গত করা হোক।
এদিন লোকসভার জিরো আওয়ারে বাংলা ও বিহারের উল্লিখিত জেলাগুলিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের কারণে জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই সাংসদ। সেই সঙ্গে দাবি করেন, ‘‘ওই জেলাগুলিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে এনআরসি কার্যকরের উদ্যোগ নিক কেন্দ্র।’’ একইসাথে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ থেকে লোক এসে হিন্দুদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। ঝাড়খণ্ড পুলিশ কোনও কাজ করছে না। আমার অনুরোধ মালদহ, মুর্শিদাবাদ, আরারিয়া, কিষাণগঞ্জ এবং কাটিহার নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হোক। নইলে হিন্দু আর থাকবে না। এনআরসি চালু করুন। কিছু করতে না পারলে আগে কমিটি পাঠান। ধর্মান্তরণ এবং বিবাহের ক্ষেত্রে অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হোক।’’ সেই সঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের নাম করে বলেন, ‘‘বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ সুনিশ্চিত করতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ মালদহ ও মুর্শিদাবাদে গ্রামের পর গ্রাম খালি করে দিচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁর বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হলে তিনি পদত্যাগ করতেও তৈরি।
এ ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, “লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে বিজেপি দিশেহারা হয়ে গিয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদের তাস খেলতে চাইছে।” নিশিকান্তের এই বক্তব্যকে পাগলের প্রলাপ হিসাবে কটাক্ষ করেন তিনি, তিনি আরও বলেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, উত্তরবঙ্গকে আলাদা করতে হবে। গোড্ডার বিজেপি সাংসদ বলছেন, মুসলিম জেলাকে আলাদা করতে হবে। এগুলো বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত। আমরা এ সব হতে দেব না। এবং এই জিনিস বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবে না।” এই প্রসঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিপিএমের আইনজীবী নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “ভোটের সময়ও বিজেপি উগ্র হিন্দুত্বের জিগির তুলেছিল। এখনও সেই চেষ্টা জারি রেখেছে। আসলে দেশের মানুষের প্রধান সমস্যাগুলি সমাধান না করে নজর ঘোরাতে এসব বলা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, এই নিশিকান্ত দুবেই প্রথম কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ করার অভিযোগ তুলেছিলেন। যার জেরে গত লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হতে হয় মহুয়াকে। এ বার নিশিকান্ত লোকসভাতেই বাংলা ও বিহারের পাঁচটি মুসলমান প্রধান জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি তুলেছেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*