অমৃতা ঘোষ :- কেরলার ওয়েনাডে ধস নামার পর এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত। মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াল ১৪৩।
তবে দুর্যোগ যে এখানেই থেমে গেল তা নয়। আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি চলবে কেরলে। অর্থাৎ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। কারণ, এই মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে বহু রয়েছেন বহু মানুষ।
মাত্র চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে ওয়েনাডে তিনবার ধস নেমেছে। এর মূল কারণ, অতিরিক্ত ভারি বৃষ্টি।
এখনো পর্যন্ত মৌসম ভবন জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় এখানে ৩৭০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে, যা মোটেই স্বাভাবিক নয়। এই ব্যাপক বর্ষণের কারণেই জায়গায় জায়গায় ধস নামে।
সোমবার গভীর রাতের এই ঘটনা টি ঘটে। তাই ঘুমের মধ্যেই মানুষের পালাবার পথ পায়ে নি। তার জন্য অনেক মানুষের ঘুমের ঘোরেই মৃত্যু হয়। বর্তমানে বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনো চাপা পড়ে আছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা মাত্রা ছাড়িয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে মাত্র ৩৭ জনকে শনাক্ত করা গেছে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, জোর কদমে উদ্ধার চলছে, ফলে মৃতের সংখ্যা আদতে কত হতে পারে তা হলফ করে বলা যাচ্ছে না এখনি। তিনি এও জানান, ওয়েনাড়ে ৪৫টি ত্রাণ শিবির এবং গোটা রাজ্যে ১১৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর কাজ চালাচ্ছে পুরোদমে। উদ্ধারকাজ পর্যবেক্ষণের জন্য কোঝিকোড়ে কন্ট্রোলরুমও খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়েছেন, রাজ্যের এই বিপর্যয়ে বিভিন্ন রাজ্য এবং সংস্থা অর্থ সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছে।
কেরল ব্যাঙ্ক ৫০ লক্ষ টাকা, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী ২ কোটি এবং তামিলনাড়ু সরকার ৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেন। বুধবারই আবার কেরলে যেতে পারেন রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী।
সংসদে ইতিমধ্যেই রাহুল দাবি করেছেন, ওয়েনাড এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের বহু এলাকা ধসপ্রবণ হয়ে রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে দেশের বহু জায়গাই ধসপ্রবণ হয়েছে, যা খুবই আতঙ্কের বিষয়। ফলে এই মুহূর্তে ধসপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
Be the first to comment