চিরন্তন ব্যানার্জি : – কেরলে যত উদ্ধার কাজ এগোচ্ছে ততই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কেরলের ভয়াবহ ভূমিধসে ইতিমধ্যেই উদ্ধার হওয়া দেহের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৬। বেসরকারি মতে, এই সংখ্যা আরও বেশি। এখনও ২২৭ জনের খোঁজ মেলেনি, যাঁরা চাপা পড়ে রয়েছেন ধ্বংসস্তূপের তলায়। কয়েকশো মানুষ জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। জানা যাচ্ছে, ৭৭ জন পুরুষ, ৬৭ জন মহিলা এবং ২২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যেই সেনাবাহিনীর কর্মী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), কেরলের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী, রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবার কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পাহাড়ি ওই এলাকায় ভূমিধসের কারণে হাজার হাজার টন পাথর এবং মাটির যে স্তূপ তৈরি হয়েছে, তা খুঁড়ে উদ্ধারের কাজ চালানো খুব কঠিন বলে ওয়েনাড় জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
বুধবার কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘‘ওয়েনাড়ে উদ্ধার অভিযান পুরোদমে চলছে। আমাদের রাজ্য এমন বেদনাদায়ক দৃশ্য আগে কখনও দেখেনি।’’ কেরল সরকার জানিয়েছে, মুন্ডাক্কাই, মেপ্পাড়ি এবং চুরামালা এলাকায় মৃতদের মধ্যে ৯৭ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭৫ জনের দেহ পরিজনেদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভূমিধসে আহত মোট ২১৯ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৭৮ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর পাশাপশি এই পরিস্থিতিতে আজ, বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সমস্ত মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতাদের সে বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যে দু’দিনের শোক পালনের ডাক দিয়েছেন পিনারাই বিজয়ন।
তবে প্রকৃতির রোষে বিপর্যস্ত ওয়েনাড়ের বিপদ এখনই কাটছে না। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওয়েনাড় এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। সেই সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে ওয়েনাড়ের উপর দিয়ে। কোথাও কোথাও সেই হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। দুর্যোগ এবং ভারী বৃষ্টির সতর্কতার কারণে কেরলের বিভিন্ন জেলায় বুধবার বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ।
অন্য দিকে, ধসের কারণে রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। বেশির ভাগ জায়গায় রাস্তা ধসে গিয়েছে। ফলে পুলিশ-প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আজ বিধ্বস্ত ওয়েনাড়ে যাবেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন ওয়েনাড়ে সাংসদ রাহুল গান্ধী। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও যাবেন রাহুলের সঙ্গে, গোটা এলাকা ঘুরে দেখবেন তাঁরা।
Be the first to comment