তবে কি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তিনিই ? বাংলায় পদ্ম ফুটলে কি তিনিই বসবেন প্রশাসনিক প্রধানের সিংহাসনে ? যাঁকে নিয়ে এই জল্পনা, তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ শনিবার খড়গপুরের সভামঞ্চ থেকে যাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী ৷
এদিন খড়গপুরের বিএনআর মাঠে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ মোদী মঞ্চে ওঠার পরই তাঁর হাতে উপহার তুলে দেন দিলীপ ৷ তাঁর ভাষণ দিয়েই শুরু হয় সভার কাজ ৷ এরপর বলতে ওঠেন মোদী ৷ আর ভাষণের একেবারে শুরুর দিকেই নজর কাড়ে মোদীর মুখে দিলীপ স্তূতি ৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিলীপ ঘোষের মতো একজন রাজ্য সভাপতি তাঁর দলের গর্ব ৷ দলের কাজ করতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ যে অনেক আত্মত্য়াগ করেছেন, তাও সকলকে মনে করিয়ে দেন মোদি ৷ তাঁর বার্তা, বাংলায় যে পদ্ম ফুটবেই, সেই বিষয়ে তিনি নিশ্চিত ৷ আর তার অন্যতম কারিগর দিলীপ ঘোষ ৷ আজ দল যে জয় পেতে চলেছে, তার জন্য বহু বছর ভালো করে ঘুমোননি দিলীপ ৷ তাঁর উপর হামলা চালানো হয়েছে ৷ তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে ৷ এমনকি খুনের চেষ্টাও করা হয়েছে ৷ তবুও দিলীপ ঘোষ ভয় পাননি ৷
‘দিদির হমকি’তে মাথানত করেননি তিনি ৷ বাংলার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থেই নিজের জীবন পণ করে দলের কাজ করে গিয়েছেন ৷ আর দিলীপের সেই আত্মত্যাগই বাংলায় বিজেপিকে জয় এনে দেবে বলে নিশ্চিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ৷
খোদ প্রধানমন্ত্রী যখন দিলীপ ঘোষকে এমন দরাজ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, তখন তা নিয়ে জল্পনা তো হবেই ৷ এতদিন কানাঘুষো চলছিল, বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হতে পারেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ ৷ কিন্তু সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছেন দিলীপ নিজেই ৷ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটে তিনি দাঁড়াচ্ছেন না ৷ বিজেপির ঘোষিত প্রার্থীতালিকাতেও এখনও পর্যন্ত দিলীপের নাম ওঠেনি ৷ কিন্তু এই দিলীপের জন্যই উত্তরপ্রদেশ থেকে আনা হয়েছে খাস গাড়ি ! যাকে বলে ক্য়ারাভান ৷ শোওয়া-বসা-থাকা-খাওয়ার সমস্ত অত্যাধুনিক বন্দোবস্তই রয়েছে সেখানে ৷
দলের নির্দেশ, এই গাড়িতে চড়েই রাজ্য়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াতে হবে দিলীপকে ৷ প্রত্যেকটা আসনে বিজেপি যাতে ভালো ফল করে, তা নিশ্চিত করার গুরুদয়িত্ব দিলীপের পোক্ত কাঁধেই দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব ৷
আর এই প্রেক্ষিতেই নানা কথা ভাসছে রাজনৈতিক মহলে ৷ দিলীপের এই গুরুত্ববৃদ্ধি কি শুধুই ভোটের নজরদারির জন্য ও পরিচালনার জন্য ? নাকি ভোটের ফল বিজেপির পক্ষে গেলেই শুরু হবে আসল খেলা ? এখনও পর্যন্ত বিজেপি তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি ৷
উত্তরপ্রদেশ ভোটের সময়েও কিন্তু এই কৌশলেই এগিয়েছিল তারা ৷ কোথাও যোগী আদিত্যনাথকে সম্ভাব্য় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রচার করা হয়নি ৷ কিন্তু তাঁর উপরেও দায়-দায়িত্ব ছিল অনেক ৷ সেক্ষেত্রে এবারের নির্বাচনে বিজেপি জিতলে ভোটে না দাঁড়িয়েও দিলীপের সামনে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দরজা বন্ধ হচ্ছে না ৷ ভারতের নির্বাচন পরিকাঠামোতেও সেই ব্যবস্থা মজুত রয়েছে ৷
Be the first to comment