গান্ধী স্মরণে অর্জুন সিং ও রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে এক মঞ্চে নেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। স্পষ্ট জানালেন দলের নেতাকে খুনের সঙ্গে যুক্ত অর্জুন। তাই খুনীর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করতে চান না বনমন্ত্রী। তাই তিনি মঞ্চে থাকেননি। মহাত্মা গান্ধীর স্মরণ দিবসে কার্যত এমনই ছবি দেখা গেল গান্ধীঘাটে।
রবিবারের সকাল গান্ধীঘাটের অনুষ্ঠানে দেখা যায়, রাজ্যপালের পাশে অর্জুন সিং উপস্থিত থাকলেও মঞ্চে নেই বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বরং তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেও মঞ্চ ছেড়ে পেছনের আসনে বসেন এদিন। যা নিয়ে ইতিমধ্য়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কেন এভাবে পেছনে বসলেন জ্যোতিপ্রিয়? তাঁর সাফ যুক্তি, রাজ্যপাল তাঁর পাশে একজন ‘খুনীকে’ এনে বসিয়েছেন। কোনও খুনীর সঙ্গে তিনি মঞ্চ ভাগ করতে পারবেন না। তবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরেছেন বনমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমি কোনও খুনীর সঙ্গে মঞ্চ কিছুতেই ভাগ করতে পারব না। ইছাপুরে আমাদের দলের নেতা খুন হয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সাংসদের যোগ রয়েছে। তেমন একজন ক্রিমিনালকে পাশে বসিয়ে রাজ্যপাল অনুষ্ঠান করছেন। আমি কিছুতেই তাতে ওঁদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করব না।”
বস্তুত,ইছাপুরে তৃণমূল নেতা গোপাল মজুমদার খুনের ঘটনায় বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। এই বিজয় অর্জুন সিং-য়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সেই ঘটনায়, অর্জুন জানিয়েছেন, রাইফেল ফ্যাক্টরির দেনাপাওনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল, সেখান থেকেই গোপাল মজুমদার খুন হয়েছেন। বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে যে বিজেপি কর্মীকে আটক করা হয়েছে সেই বিজয় কয়েকদিন আগেই তৃণমূলের সন্ত্রাসের শিকার হন বলে অভিযোগ অর্জুনের।
ব্যারাকপুর সাংসদের কথায়, “তদন্ত না করেই কী করে একজনকে আটক করা হল? ব্যারাকপুরে একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। তৃণমূলের এ টিম, বি-টিম রয়েছে। নিজেদের মধ্যেই তারা ঝগড়া করে। সেখান থেকেই বিরোধ। বিজয়ের সঙ্গে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। বরং, বিজয়ের উপর হামলা করা হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে ও বেঁচে ফেরে।” তাঁর আরও সংযোজন, “রাইফেল ফ্যাক্টরির ঠিকাদারি নিয়ে ঝামেলা চলছিল। সেখানে দেনাপাওনা নিয়ে বচসার জেরেই নিজেদের লোকেদের দিয়ে খুন করিয়েছে। এখানে বিজেপির কোনও যোগ নেই।
ইছাপুরে তৃণমূল নেতার খুনে কার্যত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় শাসক শিবিরের অভিযোগ বিরোধীদের দিকে। অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন ইছাপুরের তৃণমূল নেতা গোপাল মজুমদার। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই খুনের হুমকি পাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা। তাঁর স্ত্রী শিপ্রা মজুমদারকেও কুপিয়ে খুন করার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু দুজনেই সেযাত্রায় পালিয়ে বাঁচেন তাঁরা। ফের শনিবার রাতে গোপালবাবুর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। তখনই তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। শনিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার মনোজ বর্মা বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে পৌঁছন। খুঁটিয়ে দেখেন ঘটনাস্থল। কে বা কারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
Be the first to comment