পিয়ালি :-
“চোখের আলোয় দেখেছিলেম, চোখের বাহিরে, অন্তরে আজ দেখব যখন আলোক নাহি রে “……
এই চোখের আলো হল মানুষের কাছে ভগবানের দেওয়া এক আশীর্বাদ। কিন্তু নানা কারণে মানুষ চোখ নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকেন। কারোবা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি নেই , কেউবা আগে ভালো দেখতেন এখন নানা রকম সমস্যা হচ্ছে। চোখের এই বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ২৭ বছর আগে খরদায় তৈরি হয়েছিল শংকর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট। ২০১৯ সালে নিউ টাউন এ তৈরি হয় এদের দ্বিতীয় শাখা।
বর্তমানে কলকাতা করপোরেশন এর সঙ্গে যৌথ ভাবে চোখের নানা সমস্যা নিয়ে প্রাইমারী আই কেয়ার সেন্টার চালাচ্ছে এরা। কথা হচ্ছিল এই সংস্থার কর্তাব্যাক্তি অভিজিৎ দাস এর সঙ্গে। তিনি বলেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ও বারাসাতে আমরা অনেক আই ক্যাম্প করেছি। এবং বিনামূল্যে দরিদ্রদের ছানি অপারেশন ও করে থাকি। এই ভাবে গত বছর ১৮০০ টি চোখের অপারেশন বিনামূল্যে করেছে তারা। যাদের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো তাদের জন্য এই সংস্থা সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণের ব্যবস্থা করেছে। এইটা একটু খোলসা করে বলা যাক। ধরা যাক একটা প্রগ্রেসিভ লেন্স এর চশমা করতে যেখানে অন্যত্র ৩০০০-৪০০০টাকা লাগে সেখানে এরা ৮০০ টাকা তেই করছেন। বাই ফোকাল চশমা হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
অভিজিৎ বাবু বলেন , ‘ আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো চোখ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। তাই আমরা জেলায় জেলায় গ্রামে গ্রামে অঙ্গনওয়ারি কর্মী দের সচেতানতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
বিশেষত উত্তর ২৪ পরগনায় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে স্কুলের বাচ্চাদের জড়ো করে বিনামূল্যে চশমা ও চোখ পরীক্ষাও দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ও জয়নগরে আমরা ক্যাম্প করে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করি।
যে ফেকো সার্জারি করতে ৩০ হাজার টাকা লাগে আমাদের ডাক্তাররা নিজেরা পয়সা না নিয়ে ১০ হাজারে তা করে দিচ্ছেন।
সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাব এ একটি সারাদিন ব্যাপী এই ক্যাম্প এর ব্যবস্থা করেন এই সংস্থা। সাংবাদিকরা সারাক্ষণ পেশাগত বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তাই তাদের শরীরের যত্ন নেয়া হয় না।
এই পেশায় চোখের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে চশমা পরিবর্তন করা, অথবা নানা সমস্যা উপেক্ষিত থেকে যায়। অভিজিৎ বাবু বলেন যারা ডায়াবেটিক তাঁরা জানেনই না যে সুগার থেকে চোখের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া আরো চোখের নানা অসুখ যেমন চোখে প্রেশার বা গ্লুকোমা, এছাড়া চোখের নানা অসুখ হয়। কাজের চাপে অসুখ বাসা বেধেই থেকে যায় আমাদের শরীরে। প্রেস ক্লাব এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের এই ক্যাম্প এ সাংবাদিকদের চোখের নানা ধরনের রোগ নির্ণয় হলো তাই অতি সল্প মূল্যে দেওয়া হলো চশমাও। বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য যে প্রেস ক্লাবের সমস্ত কর্মী দের বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা তো হলোই , চশমাও তারা পেলেন নিখরচায়। অর্থ ও সময়ের অভাবে এরা অনেকেই চোখের জটিল রোগ বাঁধিয়ে বসে ছিলেন। তাদের এই মানবিক কাজের জন্য প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর ও সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক এই শংকর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
Be the first to comment