আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ বিরোধীদের প্রতি তাঁর সাফ বার্তা, ‘‘আমরা এবার এমনভাবে জয়লাভ করব, তখন বুঝতে পারবেন। যাঁরা ব্রিজ নিয়ে কটাক্ষ করছেন, তাঁরা সব ব্রিজ দেখে এসে বলুন। রাজ্য পূর্ত দপ্তর রেললাইনের উপর দিয়ে ১৪টা ব্রিজ করেছে। এই বাজেট যদি ভোটের ইস্তাহার হয়, তাতে আপত্তি কোথায়? সোমবার বিধানসভায় বাজেট ভাষণের উপর আলোচনা চলাকালীন এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করে মমতার বার্তা, মানুষের কাজ করতে কোনও চতুরতার প্রয়োজন হয় না। এই প্রসঙ্গে রাজ্য় সরকারের ভাবী প্রকল্পগুলির কথাও উল্লেখ করেন মমতা৷ জানান, এদিন বিকেলেই ১৯টি নতুন শিল্প প্রকল্পের সূচনা করা হবে ৷ তাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৭২ হাজার ২০০ কোটি টাকা৷ কর্মসংস্থান হবে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ মানুষের৷
কেন্দ্র তথা বিজেপির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর অসহযোগিতাতেই একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বঙ্গবাসীকে৷ পালটা নয়া দিল্লির বিরুদ্ধেও বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়৷ তাঁর বরাবরের দাবি, তৃণমূলের আমলেই বাংলায় সবথেকে বেশি উন্নয়ন হয়েছে৷
এমনকী, তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলার জন্য কী কী করেছিলেন, বহুবার সেই খতিয়ানও তুলে ধরেছেন মমতা৷ ইদানিংকালে বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প৷ আলোচনা চলছে উত্তর-দক্ষিণে মেট্রোর সম্প্রসারণ নিয়েও৷ এই দু’টি প্রকল্পই যে কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার মানুষের উপকারে লাগবে, সেকথা বলাই বাহুল্য় ৷ ফলে, প্রকল্প প্রস্তাব ও তার রূপায়নের কৃতিত্ব নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য়ের মধ্যে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি৷
এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিরোধীরা কি কেউ অস্বীকার করতে পারবেন, মেট্রো যেটা হচ্ছে, তা আমি করে দিয়েছিলাম ? আমার সময়ে করে দিয়েছিলাম। এটা আদায় করতে গিয়ে প্রণবদার সঙ্গে ঝগড়া পর্যন্ত করতে হয়েছিল৷ আমরা মানুষের ৯০ শতাংশ অভিযোগের সমাধান করেছি বলেই পুরস্কৃত হয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করতে তাদের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছি আমরা৷ মানুষই আমাদের শংসাপত্র দিচ্ছে৷ আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি। বহু মানুষই ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়ে গিয়েছেন৷ কোনও দল দেখা হয়নি ৷
এদিনের জবাবি ভাষণে স্বাভাবিকভাবেই নানা ইশুতে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা ৷ নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রীকেও৷ উঠে আসে কৃষক প্রসঙ্গ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিথ্যা কথা বলা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। আমি চাই, ভাগচাষিরাও সমান অধিকার পান। কৃষক সংক্রান্ত যে ডেটা চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, আমরা সেই তথ্য পাঠিয়ে দিয়েছি৷ আমরা চাই, কিষাননিধির টাকা যেন ভাগচাষিরাও পান। প্রত্যেক কৃষককেই সাহায্য করতে হবে। আমাদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় 2 কাঠা জমির মালিকও টাকা পাবেন৷ কিন্তু, ওরা (কেন্দ্র) যে প্রকল্প করেছে, তাতে ন্যূনতম 2 একর জমি থাকলে তবেই সেই কৃষক আর্থিক সাহায্য পাবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বাংলার কৃষকরাও যাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পান, তার সবরকম ব্যবস্থাই করেছে রাজ্য সরকার৷ তারপরও মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে৷ এদিন বিধানসভায় মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ওরা (কেন্দ্র) একটা আলাদা পোর্টাল করেছে কৃষকদের নিয়ে। ৬ লাখ কৃষকের তথ্য যাচাই করতে বলেছিল আমাদের৷ ইতিমধ্যেই আমরা আড়াই লাখ কৃষকের তথ্য যাচাই করে পাঠিয়ে দিয়েছি। আর কী করতে পারি?
Be the first to comment