চিরন্তন ব্যানার্জি:-
বেশ কিছুদিন ধরেই সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে খবর আসছিল তাঁর লোকসভা কেন্দ্র সাতগাছিয়া, মহেশতলা এলাকা থেকে দলের নাম করে, ভয় দেখিয়ে এজেন্সির কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা। এবার তা রুখতে ‘দিদিকে বলো’-র ধাঁচে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে ‘এক ডাকে অভিষেক’ কর্মসূচি চালু করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তারই সম্প্রসারণ ঘটালেন তৃণমূল সাংসদ। চালু করলেন দুর্নীতি-বিরোধী হেল্পলাইন নম্বর — ৭৮৮-৭৭৭৮৮৭৭। ‘এক ডাকে অভিষেক’ কর্মসূচির হেল্পলাইন নম্বরটিও এটাই ছিল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সংসদীয় এলাকায় কোথাও তোলাবাজি বা হুমকির ঘটনা ঘটলেই যেন ওই মুহূর্তের ভিডিয়ো করে হেল্পলাইন নম্বরে হোয়াটস্অ্যাপ করে দেওয়া হয়। তা যদি সঠিক হয়, তা হলে পুরস্কার দেওয়া হবে। আর যদি অসত্য হয়, তা হলে ‘তিরস্কার’। অর্থাৎ, অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ।
শনিবার ডায়মন্ড হারবারের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন অভিষেক। আমতলা সমন্বয় প্রেক্ষাগৃহে সেই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দুর্নীতি বিরোধী হেল্পলাইন চালু করার ঘোষণা করেন তিনি। অভিষেক জানান, গত দু’মাসে সাতগাছিয়া, মহেশতলার মতো এলাকা থেকে তাঁর কাছে সাত-আটটা অভিযোগ এসেছে। দলের নাম করে ভয় দেখানো, টাকাপয়সা চাওয়া, কাজের দেরি করা— এ রকম নানাবিধ অভিযোগ। সাংসদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এটা বরদাস্ত করব না। অভিষেক বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে কেউ টাকা চাইলে, হুমকি দিলে একটা ভিডিয়ো করে হোয়াটসঅ্যাপে দিয়ে দিন। আমরা পুলিশকে ফরওয়ার্ড করে দেব। অনেকে আছেন, যাঁরা অভিযোগ জানানোর পর নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চান। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’
এদিন তিন ঘন্টার পর্যালোচনা বৈঠকে ৭০ কোটি টাকার নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং ৭৫ কোটি টাকার রাস্তার উদ্বোধন হয়েছে বলে জানান অভিষেক। তাঁর কথায়, ”যতদিন সাংসদ থাকব, মানুষের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর।” স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনায় তিনি সাব সেন্টারগুলিতে পর্যাপ্ত ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তারের সমস্যার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেন। দুর্গাপুজোর আগে দলের প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাদের প্রয়োজন তাঁদের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দিয়ে আসবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পর্যালোচনা বৈঠকে ফলতা-মথুরাপুর জলপ্রকল্প চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া বাকি থাকা বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। ৫৬৫ কোটি টাকার অগমেন্টেশন প্রকল্পও দ্রুত শেষ করার জন্য বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু রাস্তার কাজ বছর শেষ হওয়ার আগেই শেষ করে ফেলা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দলের কর্মী-নেতাদের পারফরম্যান্সের ময়নাতদন্তের কথা বলেছিলেন অভিষেক। এদিন তা নিয়ে বলতে গিয়ে সাংসদ জানান, এর ভিত্তিতে সাংগঠনিক রদবদল নিশ্চিতভাবে হবে।
Be the first to comment