যাবতীয় জল্পনা ও বুথফেরত সমীক্ষা সত্যি করে পঞ্জাবে বিপুল জয়ের পথে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি। পঞ্জাব জয় আপের পক্ষে খুব সহজ ছিল, এমনটা নয়। কারণ পঞ্জাবের রাজনীতিতে কংগ্রেস, অকালি দল, বিজেপির মত বাঘা বাঘা প্রতিপক্ষ থাকলেও তাদেরকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে সীমান্তবর্তী রাজ্যে বিপুল জয়ের দিকে কেজরীবালের আপ। আম আদমি পার্টির এই জয়ের পিছনে নির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী কারণে বিপুল সাফল্য পেল আম আদমি পার্টি…
পরিবর্তনের হাওয়া: পঞ্জাবে দীর্ঘ সময় ধরেই ক্ষমতায় ছিল প্রকাশ সিং বাদলের শিরোমণি অকালি দল। বিজেপির সঙ্গে অকালি দলের দীর্ঘদিনের জোটও ছিল। এর মাঝে কংগ্রেসও বেশ কিছুদিন সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। শেষ ২০১৭ নির্বাচনে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের নেতৃত্বে পঞ্জাবে জিতেছিল কংগ্রেস। যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা থেকে পঞ্জাবের সাধারণ মানুষ কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছিল, ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস ও অকালি দলের কাজ করার পদ্ধতির মধ্য সাদৃশ্য রয়েছে। তাই সাধারণ জনগণ ধরেই নিয়ে ছিলে রাজ্যে দলের পরিবর্তন হলেও আপাতভাবে কোনও পরিবর্তন হয়নি। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে সেখান কংগ্রেস -বিজেপির মত বড় দলগুলি ক্ষমতায় ছিল, তাই আপকে সুযোগ দিয়েছে পঞ্জাবের জনতা।
‘দিল্লি মডেল’-র সাফল্য: আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল পঞ্জাবে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বারবার নিজের দিল্লিতে তাঁর সরকারের কাজগুলি তুলে ধরেছিলেন। দিল্লিতে সরকারি শিক্ষাকেন্দ্রের উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্যে উন্নয়ন, সস্তায় বিদ্যুৎ ও জলের মত গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার কথা তুলে ধরেছিলেন কেজরীবাল। পঞ্জাবে বিদ্যুতের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি এবং সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেকাংশেই বেসরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে কেজরীবালের দিল্লি মডেল সহজেই গৃহীত হয়েছে।
মহিলা ও যুবদের সমর্থন: আম আদমি পার্টি পঞ্জাবের মহিলা ও যুবদের বড় অংশের সমর্থন পেয়েছে। ভোট প্রচারের দুর্নীতিকে উপড়ে ফেলার বার্তা দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। সেই কারণে যুব সমাজের একটা বড় অংশ কেজরীবালের এই প্রতিশ্রতিতে আকৃষ্ট হয়েছিল। একই রকমভাবে প্রত্যেক মাসে মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ১ হাজার টাকা জমা দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি আম আদমি পার্টি দিয়েছিল। ভোটবাক্সে তারই প্রতিফলন হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে ভগবন্ত মান : একটি ফোন নম্বর চালু করে সাধারণ মানুষের থেকে মতামত নিয়ে প্রাক্তন কমিডিয়ান তথা সাংসদ ভগবন্ত মানকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে তুলে এনেছিল আপ। মানকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করায় ‘বহিরাগত’ তকমা মুছে গিয়েছে। মানরে ভাবমূর্তি যথেষ্টই স্বচ্ছ, যা আম আদমি পার্টিকে মানুষের বিশ্বাস অর্জনে সাহায্য করেছে।
Be the first to comment