অমৃতা ঘোষ:-
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে দিকে দিকে মিছিলে সামিল হচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চাই, এমনটাই দাবী সকলের। এই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হচ্ছেন নানান স্কুল পড়ুয়ারাও। ন্যায় বিচারের দাবী রাস্তায় নেমেছে সকলে। কিন্তু এবার স্কুল এই মিছিলে সামিল হওয়ায় তিনটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে পাঠানো হল শোকজ নোটিশ।
জানা গিয়েছে, হাওড়ার বালুহাটি হাইস্কুল, বালুহাটি গার্লস হাইস্কুল এবং ব্যাঁটরা রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে এও শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে হাওড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা ডি-আইয়ের তরফে। আর এই নোটিশের জেরে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসের তরফে।
গত ২৩ আগস্ট এই শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে তিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের। এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “এটা কি ব্রিটিশ শাসন চলছে নাকি? পড়ুয়ারা স্বতস্ফূর্তভাবে কোনও আন্দোলনে যোগ দিলে প্রধান শিক্ষক কীভাবে বাধা দেবেন? তাছাড়া ঘটনাটি তো স্কুল ক্যাম্পাসে ঘটেওনি, ফলে স্কুলের বাইরে পড়ুয়ারা কী করছে, তার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকদের নয়ও”।
তিনি আরও বলেন, “ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুকে ঘিরে দ্রুত তদন্ত এবং বিচার চেয়ে রাজ্য, দেশ এবং সারা বিশ্বে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকা- শিক্ষাকর্মী তার বাইরে নয়। রাজ্যজুড়ে যে আন্দোলন, অবস্থান, বিক্ষোভ চলছে তা এক কথায় নজিরবিহীন’।
বলে রাখি, ঘটনার সূত্রপাত দু’দিন আগে। এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে প্রাথমিক স্কুল, আপার প্রাইমারি, ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে পড়ুয়ারা স্কুলের বাইরে কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে না। এই নির্দেশিকায় নির্দিষ্টভাবে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের কথা উল্লেখ না করলেও যে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশিকা, তা বেশ স্পষ্টই ছিল।
এরপর গতকাল, শুক্রবার নবান্নের তরফে সাফ জানানো হয়, রাস্তা অবরোধ হোক বা মিছিল, কোনও রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে বা মদতে হওয়া স্কুল পড়ুয়ারা কোনও কর্মসূচিতেই অংশ নিতে পারবে না। নবান্নের নির্দেশ, কোন কোন জায়গায় এমন ঘটনা ঘটছে, তা খুঁজে বের করে সেই ঘটনার প্রবণতা ঠেকাতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নবান্নের তরফে এও জানানো হয়, স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্মসূচি ছাড়া কোনও পড়ুয়া অন্য কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে না। স্কুলের বাইরেও কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে না তারা। কোথাও এমন কী ঘটছে, জেলা প্রশাসনকে সেসব দিকে কড়া নজর রাখতে হবে। এরপরই হাওড়ার তিন স্কুলকে নোটিশ পাঠানো হয় জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে।
Be the first to comment