রোজদিন ডেস্ক :-
ঋতুচক্র অনুযায়ী শরৎ কাল পরে গিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে বর্ষা তার অতিব বৃষ্টির প্রভাব বিস্তার করেই চলছে। যার ফল স্বরূপ অতি বৃষ্টির দাপটে ক্রমশই বাড়ছে জলের স্তর। ঠিক এমনটাই হয়েছে প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে।
গঙ্গায় জলের স্তর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ফারাক্কা ব্যারেজে জলের স্তর বিপদসীমা (৭২ ফুট) ছাড়িয়েছে। বর্তমানে সেখানে জলের উচ্চতা ৭৬ ফুট রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে ফারাক্কার গেট খোলার জন্য এখনই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বা আদৌ হবে কি না, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, নিয়ন্ত্রিতভাবে ১০৯টি গেট থেকে জল ছাড়া হচ্ছে।
সোমবার সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গিয়েছে, ‘এখানে নিয়ন্ত্রিত কথার অর্থ সব গেট একই উচ্চতায় খোলা হয়নি। কোথাও একটি গেটের ১০ বা ১২ ফুট খোলা হয়েছে তো অন্য কোথাও গেট খোলা হয়েছে ৩ বা ৪ ফুট। ফলে সব গেট দিয়ে একই পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে না। যাতে কোথাও বন্যা না হয়, সেটা মাথায় রেখেই এটা করা হচ্ছ।’
২৪ আগস্ট ফারাক্কার গেটগুলো খুলে দেওয়ার পর জল ছাড়া শুরু হয়। তবে এতে গত দুই দিনে নদ-নদীতে উল্লেখযোগ্যভাবে জল বাড়েনি বা বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানা যায়। এর প্রমাণ হিসেবে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘জল বাড়লে পদ্মায় তা বাড়ার আগে মুর্শিদাবাদের উত্তরে ফারাক্কা ব্লক এবং শামসেরগঞ্জ ব্লক আংশিকভাবে ভেসে যেত, যা গত দুই দিনে হয়নি।’ নিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ার কারণেই ফারাক্কার দুই জেলায় জল বাড়েনি বলে জানান তিনি।
তবে একই সঙ্গে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিহারে গঙ্গায় যদি জলের মাত্রা বাড়তে থাকে, তবে আগামী কয়েক দিনে কী হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
ফারাক্কা থেকে বেরিয়ে যেসব খাল (ফিডার ক্যানাল) মুর্শিদাবাদের অন্যান্য জেলা হয়ে ভাগীরথী দিয়ে দক্ষিণবঙ্গে ও কলকাতায় পৌঁছাচ্ছে, সেগুলোতেও জলের মাত্রা বাড়েনি। ‘ফিডার ক্যানালে’ জল বাড়লে মুর্শিদাবাদের অন্যান্য জেলা যেমন রঘুনাথগঞ্জ বা সুতিতে তা প্রবেশ করত, যা এখনো করেনি। ভাগীরথীতে জল সামান্য বাড়তে পারে। তবে তার কোনো প্রভাব এখনো লক্ষ করা যাচ্ছে না বলে সূত্র থেকে জানা যায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, ফারাক্কা থেকে যেখান দিয়ে জল বাংলাদেশে ঢুকেছে, সেসব পয়েন্টে জল বাড়তে দেখা যায়নি। তবে খুলনা ও বরিশালে বৃষ্টি বেড়ে নদ-নদীর জল বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে জানা গেছে।
ফারাক্কা থেকে যে জল আসে, তা পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গা হয়ে বাংলাদেশে রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীতে প্রবেশ করে পাংখা পয়েন্ট দিয়ে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আজ ওই পয়েন্টে জলের স্তর ২০.৫, যা বিপদসীমার (২২. ৫) নিচে রয়েছে।
Be the first to comment