চিরন্তন ব্যানার্জি :- অবশেষে সব জল্পনার অবসান। নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার দিল্লি গেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর সাথে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ফের একবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মমতা। এদিন তিনি বলেন, এক দিকে ‘আর্থিক বঞ্চনা’ আর অন্য দিকে ‘বাংলা ভাগের’ চক্রান্ত করা হচ্ছে। তাঁর প্রতিবাদ জানাতেই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি। তিনি পরিষ্কার জানান, ওই বৈঠকে বলার সুযোগ পেলে, তিনি বাংলা ভাগ নিয়ে সরব হবেন।
দিল্লি যাওয়ার আগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগে, বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে। মমতা বলেন, ‘‘বাজেটে যে ভাবে বিরোধী রাজ্যগুলিকে বঞ্চনা করা হয়েছে, সেটা মানতে পারছি না। এক দিকে ইকোনমিক ব্লকেড, পলিটিক্যাল ব্লকেড, এর সঙ্গে দেশকে টুকরো টুকরো করে দেওয়ার যে পরিকল্পনা, তার চরম নিন্দা করছি। মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাগের কথা বলছেন! শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারছি, ওদের দলের অনেক নেতারাও বিহার-ঝাড়খণ্ড-অসম-বাংলাকে ভাগ করা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিবৃতি দিচ্ছেন। কড়া নিন্দা করছি এর। বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম ও বাংলাকে ভাগ করা মানে গোটা দেশকে ভাগ করা। আমরা একে সমর্থন করি না।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা ভাগের দাবির প্রতিবাদ জানাতেই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বৈঠকে থাকব কিছু ক্ষণ। কিছু বলতে দিলে বলব। আর না হলে প্রতিবাদ করব। বাংলার হয়ে কথা বলব।’’
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়া জোটের সাত মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগের বৈঠক বর্জন করেছেন। কিন্তু মমতা সে পথে না হেঁটে ওই বৈঠক থেকেই রাজ্যের বঞ্চনার কথা তুলে ধরতে চান। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাওয়ার আগে বললেন, “সাত দিন আগেই আমাদের ভাষণের লিখিত প্রতিলিপি পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তা পাঠিয়ে দিয়েছি, কিন্তু তারপর বাংলাভাগের চক্রান্ত হচ্ছে। বাজেটেও যেভাবে বাংলা-সহ অন্যান্য বিরোধী শাসিত রাজ্যকে বঞ্চনা করা হয়েছে, এই বিদ্বেষ মেনে নিতে পারছি না। এই রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব মানা সম্ভব নয়।তাই নীতি আয়োগ থেকেই এর প্রতিবাদ করব, এটাই সঠিক জায়গা প্রতিবাদের।”
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠক রয়েছে দিল্লিতে। বিরোধী শিবির ‘ইন্ডিয়া’র বেশ কয়েক জন মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠক বর্জন করেছেন। শোনা গিয়েছে, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন না পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, কর্নাটক, কেরল, হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রীরা। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করতে পারেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার মমতা জানালেন, হেমন্তও বৈঠকে থাকতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি যতদূর জানি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও থাকবেন। দু’জন মিলে প্রতিবাদ করব।’’
Be the first to comment