বাজেটে করছাড় থেকে মধ্যবিত্তের হেঁশেলে স্বস্তি আনা চ্যালেঞ্জ নির্মলার কাছে

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি (২৩ জুলাই ) :- ২৩ জুলাই অর্থাৎ মঙ্গলবার তৃতীয় এনডিএ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। আজ গোটা দেশবাসীর নজর থাকবে, বাজেটে করছাড় থেকে নারীকল্যাণে প্রকল্প, রেলে বরাদ্দ থেকে মধ্যবিত্তের হেঁশেলে স্বস্তি না অস্বস্তি – এমনই একাধিক বিষয়ের উপর। এ বার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের আসল চিন্তা হল, বাজেটে রাজনৈতিক বাস্তব ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা। কারণ তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরলেও বিজেপি এ বার একার জোরে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে মোদী সরকার শরিক-নির্ভর হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই তেলুগু দেশম পার্টি ও জেডিইউ— সরকারের দুই প্রধান শরিক অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহারের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ আদায় করে নিতে মরিয়া। গ্রামীণ অর্থনীতিতে দুর্দশা, কৃষকদের অসন্তোষের খেসারত দিয়ে বিজেপির আসন কমেছে। বাজেটে সেই ক্ষতে প্রলেপ জরুরি। লোকসভা ভোটে বেকারত্বের সমস্যা বিজেপিকে বেগ দিয়েছে। প্রশ্ন রয়েছে মোদী জমানায় ধনী-গরিবের ক্রমবর্ধমান অসাম্য নিয়ে। বাজেটে বেকারত্ব ও আর্থিক অসাম্যের সমাধানে কী দিশা থাকে, বিরোধী শিবির তার উত্তর খুঁজবে। এর সঙ্গে মাথাব্যথা, আগামী ছ’মাসের মধ্যে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড ও দিল্লির বিধানসভা ভোট। সব মিলিয়ে ‘মধুচন্দ্রিমা পর্ব’ কার্যত পরীক্ষার মরসুম হয়ে উঠেছে মোদী সরকারের। মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন মোরারজি দেশাইকে টপকে টানা সাত বার বাজেট পেশের রেকর্ড করতে চলেছেন। অবশ্য এবার অর্থমন্ত্রীর মুখ্য চ্যালেঞ্জ, আর্থিক সংস্কার ও জনমোহিনী রাজনীতির মধ্যে ভারসাম্য রেখে বাজেট পেশ করা। তাঁকে বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য কিছু বাড়তি আর্থিক সাহায্য দিতেই হবে। একই সঙ্গে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডে ভোটের কথা ভেবেও টাকার ঝুলি খুলতে হবে। একই সঙ্গে যেমন পরিকাঠামো-সহ মূলধনী খাতে বিপুল খরচও চালিয়ে যেতে হবে। আবার অন্যদিকে তাঁকে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে হবে। অর্থাৎ বলাই বাহুল্য তৃতীয় এনডিএ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটের পেশের আগে সমগ্র বিষয় নিয়ে বেশ চাপেই আছে সরকার। উলটো দিকে বর্তমানে বিরোধীরাও শক্তিশালি, তাই সব কিছু মাথায় রেখেই আজ সকাল ১১টায় পূর্ণাঙ্গ বাজেটের পেশ করতে চলেছে মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, দেশের প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম রেল। অথচ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী গত দশ বছরে শুধু রেল দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ! এদিকে একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলেও চাইলেও সাধারণ মানুষের পক্ষে রেলের মতো গণপরিবহণ এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব। এমতাবস্থায় যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে রেলের ভাবনা কি, তা নিয়েও বাড়তি কৌতূহল রয়েছে সকলের মধ্যে। সব কিছু মিলিয়ে এবারের বাজেটকে ঘিরে হাজারও প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের। তার কতখানি নির্মলার বাজেটে উঠে এলো, জানা যাবে আর কিছু পরেই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*