প্রয়াত হলেন ঘনশ্যাম দাস বেড়িওয়ালা। শনিবার ২১ নভেম্বর রাত্রি ৯টা ৫০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনাবসান হয় তাঁর। ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ ছিলেন দীর্ঘসময়। শুধু এটুকু বললে তাঁর সম্পর্কে কম বলা হয়। নবতিপর ঘনশ্যাম দাস ১৯৪৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে
আরএসএস-এর সদস্য হন। আদপে হরিয়ানার রোহতাকের ভূমিপুত্র ঘনশ্যাম দাস ১৯৫২ সালে কলকাতায় আসেন। তিনি ছিলেন জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৮০ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি গঠিত হলে সেখানে তিনি যোগ দেন। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিজেপির সদস্য।
অটলবিহারী বাজপেয়ী ও ঘনশ্যাম দাস ছিলেন অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু। উত্তর কলকাতার সি আর অ্যাভিনিউর বাসভবনে বাবার মৃতদেহের সামনে ভেঙে পড়েন পুত্র কমল বেড়িওয়ালা। তিনিও বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। ভারাক্রান্ত মনে স্মৃতিচারণ করতে করতে বলছিলেন, বিজেপির সব সর্বভারতীয় সভাপতিদের মধ্যে সকলে আমাদের এই বাড়িতে এসেছেন। দীনদয়াল উপাধ্যায় থেকে অমিত শাহ, তালিকা দীর্ঘ। অটলবিহারী বাজপেয়ী বেড়িওয়ালা ভবনে আসতেন তাই নয়, পরিবারের লোকজনের সঙ্গে জমিয়ে গল্প করতেন। আর রাত হলে ঘনশ্যাম ও অটল দুই জিগরি দোস্ত ভিসিআর চালিয়ে পুরোনো দিনের হিন্দি সিনেমা দেখতেন। আর দুই বন্ধু সুযোগ পেলেই ফুচকা খেতে বেরিয়ে পড়তেন। বাজপেয়ী বিজেপির সভাপতি, তাতে কি। জমিয়ে আড্ডা বসত বেড়িওয়ালা হাউসে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রোটোকলের বাধা, তা সত্ত্বেও দুই বন্ধুর দেখা হওয়ায় বাধা হত না। বাজপেয়ী কলকাতায় এলে বেড়িওয়ালা পরিবার রাজভবনে গিয়ে দেখা করতেন। লালকৃষ্ণ আদবানি যখন রাম রথ বের করেছিলেন, কোথাও তিনি থাকেননি। কিন্তু কলকাতায় এসে বেড়িওয়ালা হাউসে উঠেছিলেন।
বাবার শেষ ইচ্ছে কি ছিল? একথা কমলবাবুকে জিজ্ঞাসা করায়, দু-চোখের পাতা ভিজে এল। বললেন, কিছুদিন আগে বিজেপির দুই নেতা অরবিন্দ মেনন ও শিবপ্রকাশ দেখা করতে এসেছিলেন বাবার সঙ্গে। বাবাকে প্রণাম করার পর তাঁরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনার কি চাই? বাবা বলেছিলেন, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার দেখেছি, বাংলায়ও বিজেপি সরকার হোক, এটাই দেখে যেতে চাই। ৪ নভেম্বর বাবা ৯০ ছুঁয়েছেন। চেয়েছিলাম, শতায়ু হোক। হল না, তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণের অপেক্ষায় আছি।
Be the first to comment