নয় মাস আগেই ব্রিজ তৈরি হয়ে যেত ৷ রেলের গাফিলতিতেই কাজে দেরি হয়েছে ৷ মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধনে গিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি আরও বলেন, এই ব্রিজের জন্য কেন ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে রেল? ব্রিজের অনুমতি দেওয়া ও ভাঙচুরের বিষয়টি দেখতে রেল ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে ৷ পোর্ট ট্রাস্ট ৭৭ লাখ টাকা নিয়েছে ৷ টালা ব্রিজ ভাঙার জন্যও ৫৫ কোটি টাকা নিয়েছে রেল ৷ প্রশ্ন করুন কেন টাকা নেওয়া হয়েছে ৷
মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে ব্রিজ তৈরির জন্য রেলের টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, যারা এত বড় বড় ভাষণ দিয়ে গেলেন, তাঁদের যদি আমি জিজ্ঞাস করি, এই ব্রিজ করার জন্য রেল কেন আমাদের থেকে ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে? কার টাকা নিয়েছে? কেন নিয়েছে জিজ্ঞেস করুন? কাজটা করতে নয় মাস দেরি করেছে, সঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে এই ব্রিজের অনুমতি ও ভাঙচুরের বিষয়টি দেখার জন্য ৷ এরাই আবার বড় বড় কথা বলে ৷
এদিন রেলের পাশাপশি ব্রিজ তৈরিতে পোর্ট ট্রাস্টও ৭৭ লাখ টাকা নিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, পোর্টের বড় বড় গাড়ি, ট্রাক যাচ্ছে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে ৷ কিন্তু আমরা সব রক্ষণাবেক্ষণ করি ৷ পোর্ট ট্রাস্টও ৭৭ লাখ টাকা নিয়েছে ৷ যেন মনে হচ্ছে ব্রিজটা আমার ঘরে নিয়ে যাচ্ছি ৷ এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী টালা ব্রিজের প্রসঙ্গ তোলেন ৷ তিনি বলেন, টালা ব্রিজ ভাঙার জন্যও ৫৫ কোটি টাকা নিয়েছে রেল ৷ এরপরই মঞ্চ থেকে জনগনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বুঝতে পারছেন! দেওয়ার ক্ষমতা নেই ৷ ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারার গোষাই ৷
এই ব্রিজ তৈরি করতে ৩১১.৭৬ কোটি টাকার খরচ হয়েছে বলে আজ জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি আরও বলেন, পুরোটাই রাজ্য সরকারের টাকা ৷ সম্প্রতি মাঝেরহাট ব্রিজ চালুর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ৷ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ৷ বিক্ষোভের জেরে তাঁকে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে ওইদিন দাবি করেন তিনি ৷ আজ মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধনে এসে নাম না করে ওই দিনের ঘটনা নিয়েও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
পাশাপাশি নতুন ব্রিজের নামকরণ আগেই করেছিলেন ৷ আজ ফের একবার সেই নাম মনে করিয়েদেন তিনি ৷ তিনি বলেন, সুভাষচন্দ্র বসুর নামে আগেই অনেক কিছু রয়েছে রাজ্যে ৷ আগামীদিনে আরও অনেক কিছু হবে ৷ মাঝেরহাট ব্রিজের নাম করা হয়েছে “জয় হিন্দ” ব্রিজ ৷
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট ব্রিজ। এরপর সম্পূর্ণ নতুন করে মাঝেরহাট ব্রিজ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যের পূর্ত দপ্তর। ফলে আশা করা হচ্ছিল, পুজোর আগে চালু হবে নতুন এই মাঝেরহাট ব্রিজ। কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ায় ব্রিজ চালুর বিষয়ে সংশয় দেখা দেয়। লকডাউনের মেয়াদ বাড়ায় সেই সংশয় আরও বাড়ে। অবশেষে দুই বছর তিন মাস পর চালু হল মাঝেরহাট ব্রিজ ৷
Be the first to comment