মিড ডে মিলের রিপোর্ট জমা দিতে দেরি, ২০ টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বেতন থেকে চালানোর নির্দেশ বিডিওর

Spread the love

অমৃতা ঘোষ:-

বজ্র আঁটুনি। মিড-ডে মিলের রিপোর্ট জমা দিতে নির্দিষ্ট সময়ের থেকে দেরি হয়েছে একটি দিন। তার জেরে ২০টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বেতন থেকে মিড-ডে মিল চালানোর নির্দেশ দিলেন বিডিও । তাঁর তালিকায় রয়েছে রাজ্যের পুরস্কারপ্রাপ্ত থেকে শুরু করে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের স্বামীর স্কুলও। বিডিওর এই নির্দেশিকায় আলোড়ন ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকে । শিক্ষকদের বক্তব্য, যখন মাসের পর মাস মিড-ডে মিলের টাকা বকেয়া থাকে, শিক্ষকরা পকেটের টাকা খরচ করে পড়ুয়াদের খাবারের ব্যবস্থা করেন, তখন প্রশাসন থাকে কোথায়? তাঁদের প্রশ্ন, পিএম পোষণ যোজনায় শিক্ষকদের বেতন কাটার কি কোনও গাইডলাইন রয়েছে?
শুক্রবার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের বিডিওর স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেখানে ব্লকের ২০টি প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, হাইস্কুল থেকে শুরু করে এসএসকে’র উদ্দেশ্যে বলা হয়, যেহেতু তারা ৯ তারিখের মধ্যে মাসিক মিড-ডে মিলের রিপোর্ট জমা করেনি, তাই তাদের গত মাসের মিড-ডে মিলের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব নয়। বলা হয়, গত মাসের মিড-ডে মিলের অর্থ প্রধান শিক্ষক নিজের বেতন থেকে দেবেন।
বিডিও তাপস পালের দাবি, প্রতি মাসের ৯ তারিখের মধ্যে ব্লক মিড-ডে মিল সেকশনে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ রয়েছে। বারবার বলার পরেও ওই ২০টি স্কুল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা করেনি। এতে গোটা ব্লকের মিড-ডে মিল পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। তাই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে দৌলতনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, শিক্ষারত্ন মিহিরকুমার পান্ডের বক্তব্য, ‘স্কুলে পড়াশোনা, মিড-ডে মিল চালানোর পাশাপাশি একাধিক কাজ করতে হয়। কোনও মাসে হয়তো রিপোর্ট জমা দিতে দু-একদিন দেরি হতে পারে। তার জন্য কোনও সতর্কবার্তা না দিয়ে এভাবে বেতন কেটে মিড-ডে মিল চালানোর নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ করছি। এমন তুঘলকি ফরমান জারি করলে আমাদের পক্ষে মিড-ডে মিল চালানো সম্ভব নয়।’
যামিনী রায় পুরস্কারপ্রাপ্ত হরদমনগর জুনিয়ার বেসিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক রামচন্দ্র দাস জানান, ‘বছরের বিভিন্ন সময় আমরা ৩-৪ মাস অন্তর মিড-ডে মিলের টাকা পাই। নিজেদের পকেট থেকে মিড-ডে মিলের খরচ চালাই। তখন তো কোনও পদক্ষেপ করা হয় না! আর রিপোর্ট জমা দিতে একদিন দেরি হলে প্রধান শিক্ষকের উপর কোপ? বিডিওর এই ফরমানের তীব্র নিন্দা করছি।’
জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়াকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*