রোজদিন ডেস্ক :- কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক রায় দিলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কখনও অসংযত মন্তব্য করতে শোনা যায়নি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। কিন্তু বিচারপতির পদ ছেড়ে রাজনীতিতে এসে যেন ভোল বদলে ফেলেছেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বিরোধী দলের নেত্রীর বিরুদ্ধে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরপর বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে এমনই দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের।
হলদিয়ার চৈতন্যপুরে রেখা পাত্রের কথা টেনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, তোমার হাতে ৮ লাখ টাকা গুঁজে দিলে একটা চাকরি দাও। তোমার হাতে কেউ ১০ লাখ টাকা দেয় আর রেশন হাওয়া করে দেয় অন্য দেশে। ভারতেই থাকে না সেই রেশন। তোমার রেট ১০ লাখ টাকা কেন? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করো বলে? রেখা পাত্র গরিব মানুষ। লোকের বাড়িতে কাজ করে। আমাদের প্রার্থী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সুন্দরী নন। সেজন্য তাকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়? একজন মহিলা হয়ে অন্য এক মহিলা সম্পর্কে কী করে ওই উক্তি করতে পারেন তা আমরা ভাবতে পারি না।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে যে কথা বলা হয়েছে তা কোনও ভদ্র মানুষ বলতে পারে বলে মনে হয় না। তাঁর ব্যাখ্যা, ”কাউকে ২০০০ টাকায় কেনা হয়েছে এমন কথা বলা হয়নি। আপনি বুঝেছেন ভুল। এমন কথা বলার মতো অসভ্য চরিত্র আমাদের নয়। নারীদের সম্মান কীভাবে করতে হয় তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভাল করে জানেন।” বিজেপি প্রার্থী যাতে ভদ্রতার সীমা লঙ্ঘন না করেন সেই বার্তা দিয়েছে তৃণমূল।
গোটা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে রাজ্যের শাসক শিবির। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, এই ধরনের মন্তব্য করে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়, গোটা বাংলার নারীদের অসম্মান করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলায় এমন কদর্য ভাষার কোনও স্থান নেই বলার পাশাপাশি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তোলা হয়েছে।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উচিত নিজেকে একবার আয়নার সামনে দাঁড় করানো। তিনি হাইকোর্টে বিচারপতির চেয়ারটা কলঙ্কিত করেছেন। বিচারপতির চেয়ারে বসে পয়সা নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারির কাছ থেকে। সেইমতো রায় দিয়েছেন। আজ এটা প্রমাণিত। তিনি নিজেই বলেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন তিনি বিজেপির সঙ্গে নেগোশিয়েশন করেছিলাম। কী সেই নেগোশিয়েশন? কীভাবে নিজের চেয়ারটা বিক্রি করেছিলেন বিজেপির কাছে সেটা জানা প্রয়োজন। ভারতের আইনের ইতিহাসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ধরা হবে নোংরা, দূর্নীতি পরায়ণ এক চরিত্র হিসেবে।
Be the first to comment