মোদীর শপথে আমন্ত্রিত থাকছেন শেখ হাসিনা, বিক্রমসিংঘে..

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক:- তৃতীয় বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর অনুযায়ী সেই শপথ গ্রহণ হতে চলেছে ৯ জুন রবিবার। তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাকবেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমসিংঘ। দু’জনের সঙ্গেই বুধবার ফোনে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর।
সূত্রের খবর, ভুটান, নেপাল ও মলদ্বীপের প্রধানমন্ত্রীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। জোর জল্পনা আছে পাকিস্তানকে নিয়েও। ওই দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় থাকলেও এখন তা বস্তুত খাতায় কলমে সীমাবদ্ধ। ২০১৯-থেকে বাণিজ্য বন্ধ। তবে পাকিস্তানের বর্তমান সরকার এবং প্রধান শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর শীর্ষ নেতৃত্ব বারে বারে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুর্নস্থাপনের বার্তা দিচ্ছে। ফলে পাকিস্তানের কোনও নেতৃস্থানীয় কেউ শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ২০১৪-তে মোদী তাঁর প্রথম শপথ অনুষ্ঠানে নওয়াজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমন্ত্রণ রক্ষা করেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ যুগনাথ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ‘প্রচণ্ড’কেও আমন্ত্রণ জানানো হবে। বৃহস্পতিবার সরকারি ভাবে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। সোদি আরব, সংযুক্ত আমিরশাহি এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলিতেও আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর তোড়জোড় চলছে বলে খবর। তৃতীয় দফার জন্য ইতিমধ্যেই মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা মঙ্গলবার রাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি পাঠিয়ে অভিনন্দন জানান। বুধবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। হাসিনাকে শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের গোড়ায় হাসিনার দিল্লি সফর নির্ধারিত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমসিংঘের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন। তিনিও শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, প্রধানমন্ত্রী যে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন সেই বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ভারতকে চিন্তায় রেখেছে। দুই পড়শি দেশে আর্থিক সহায়তার ঝুলি নিয়ে চিন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে, যা ভারতের সুরক্ষার জন্যও বিপজ্জনক। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই এই দুই নেতাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের মোদী সবচেয়ে আগে আমন্ত্রণ জানিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিতে চেয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন তা নয়া দিল্লির কাছে খুবই স্বস্তিদায়ক মনে হয়েছে। হাসিনা বাছাই করা শব্দে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষার কথা বারে বারে উল্লেখ করেছেন। দুই দেশের যৌথ স্বার্থে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পা মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘ভারতের লোকসভার ১৮তম নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র বিজয়ের জন্য বাংলাদেশের জনগণ এবং আমার তরফ থেকে আপনাকে অনেক অভিনন্দন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতা হিসাবে আপনি ভারতের জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণের ভার পেয়েছেন। এই বিজয় আপনার নেতৃত্ব, দায়বদ্ধতা এবং নিষ্ঠার প্রতি ভারতের জনগণের আস্থা তুলে ধরেছে। ভারতের জনগণের রায়ে আপনার তৃতীয়বারের বিরল বিজয়ের পর দু-দেশের সম্পর্ক আরও বন্ধুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ হবে।’

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে হাসিনা আরও লিখেছেন, ‘আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি, ভারতের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসাবে বাংলাদেশ দু-দেশের উন্নয়ন, শান্তি ও সুরক্ষার জন্য কাজ করে যাবে। আগামী দিনে আপনার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার আশায় রইলাম। সবশেষে লিখেছেন, মহামান্য, আমার আশ্বাসকে সর্বোচ্চ বিবেচনা হিসাবে গ্রহণ করুন।’
প্রসঙ্গত, এ বছর ৭ জানুয়ারি হাসিনা টানা চতুর্থবার এবং সব মিলিয়ে পাঁচবারের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীই প্রথম শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন তাঁকে। হাসিনা পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বিভিন্ন সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বের নানা প্রান্তে গিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রীয় সফরে তাঁর ভারতেই প্রথম আসার কথা। মোদী ও হাসিনা দু’জনেই মনে করেন তাঁদের সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*