শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে তাঁর নাম না থাকায় চরম অসম্মানিত হয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তাঁর উষ্মার কথা দিল্লির নেতৃত্বের কাছে ‘নালিশ’ আকারে জানিয়েছেন অধ্যাপিকা বৈশাখী। আর এরপরই নাকি রাজ্য বিজেপির তরফে জয়প্রকাশ মজুমদার এবং মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা তাঁকে জানান, ভুলবশত নাম ছাপা হয়নি তাঁর। ভুল হয়েছে জেনে ‘ক্ষমা করার’ সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য বিজেপি দফতরে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার সিদ্ধান্তই নেন বৈশাখী।
তবে এ বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমি সবাইকে আসতে বলেছি। সবার তো নাম দিই না আমরা। শোভনবাবু মেয়র ছিলেন, বিধায়ক, তাই ওঁর নাম দেওয়া হয়েছে। তবে ওঁর (বৈশাখী) নাম দেওয়া উচিত ছিল। এরপরই হেসে দিলীপ বলেন, তাছাড়া আমরা জানি যেমন ভাত-ডাল, তেমনই শোভনদা-বৈশাখীদি। আলাদা করে বলার কী আছে! তবে বৈশাখী প্রথমে ক্ষুব্ধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিজেপি রাজ্য দফতরের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কিন্তু, এদিন আগা গোড়াই বৈশাখীর গোমড়া মুখ চোখে পড়েছে। এমনকী সাংবাদিক বৈঠকের সময় তাঁর পাশে বসা দিলীপ ঘোষকে ডাল-ভাত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘হ্যাঁ বলেছি’। এরপরই এ প্রসঙ্গে বৈশাখীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি ঠিক বুঝলাম না, দিলীপ দা কী বলতে চেয়েছেন। কে ডাল, আর কে ভাত তা আমি জানি না…আমার স্বতন্ত্র পরিচয় আছে।
প্রসঙ্গত, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপির তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হবে, এই মর্মে দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরমধ্যে একটি সোমবার রাতে এবং অন্যটি আরেকটা ১২ ঘণ্টা পর অর্থাৎ আজ। কিন্তু, এই দুটি বিজ্ঞপ্তির কোথাও বৈশাখীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। অনুষ্ঠানে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। আর এতেই ‘ব্যথিত’ হয়েছেন বৈশাখী। তিনি বলেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আমার কাছে নিঃসন্দেহে আনন্দের। কিন্তু আমি দীর্ঘদিন ওয়েবকুপার জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকলীন একটা জিনিস অনুভব করেছি, সেটা হল আমায় কেউ কখনও অসম্মান করেননি। কখনও নিজেকে আনওয়ান্টেড মনে হয়নি। ধাক্কা লেগেছে এ ধরনের আমন্ত্রণপত্রে।
বৈশাখী আরও বলেন, গোটা বিষয়টি শোভনবাবুকে জানাই। ওঁরও খারাপ লেগেছে। উনি বিষয়টি তদারকি করেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাই বিষয়টি। এরপরই মনে হয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছে। এরপরই রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জয়প্রকাশ দা (মজুমদার) বলেন, এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল হয়, সে ক্ষেত্রে ক্ষমা করা আমার কর্তব্য। ইচ্ছাকৃত হলে, এটার কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল না।
Be the first to comment