রবিবাসরীয় সকালে টালা থেকে হাওড়া চলল সিবিআইয়ের ঝোড়ো ইনিংস

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

আদালতের নির্দেশে আরজি করে আর্থিক সহ যাবতীয় দুর্নীতির তদন্তভারের দায়িত্ব পেয়েছে সিবিআই। তারপরেই রবিবাসরীয় সকালেই ঝোড়ো ইনিংস শুরু করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এদিন সকালে ছোটো ছোটো ১৫ টা দলে ভাগ হয়ে কলকাতা থেকে হাওড়া সর্বত্রই দাপিয়ে বেড়ালেন তারা।
বেলেঘাটায় সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ হানা দিলেও, সওয়া এক ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করার পরে আটটার পরে সেখানে ঢুকতে পারেন তাঁরা। তল্লাশি চলার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘিরে ফেলে সন্দীপের বাড়ি। দুপুরে আবার সেই বাহিনীর পরিমাণ বাড়ানো হয় প্রাক্তন অধ্যক্ষর বাড়িতে। দুপুরে আরও ৬ গোয়েন্দা তল্লাশি অভিযানে যোগ দেন। কেষ্টপুরে আরজি করের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের কর্তা দেবাশিস সোমের বাড়িতেও পৌঁছয় সিবিআই। দেবাশিস আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। ওই বিভাগের ডেমনস্ট্রেটর পদে রয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিলেরও সদস্য দেবাশিস। তিনি রয়েছেন কলেজের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের কমিটিতেও। এই দেবাশিস সন্দীপের অত্যন্ত ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই খবর মিলেছে আরজি কর সূত্রে। এমনকি হাসপাতালে তিনি নিজের বিভাগের চেয়ে বেশি থাকতেন, অধ্যক্ষ সন্দীপের ঘরের পাশে একটি ঘরে। অভিযোগ, হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগে তাঁর অতিরিক্ত দাপট ছিল।
পাশাপাশি, এন্টালিতে হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠের বাড়ি যায় আরও একটি দল। দুপুরের পরে তাঁর এন্টালির বাড়ি থেকে বেরিয়ে, বশিষ্ঠকে সঙ্গে নিয়েই তাঁর অন্য একটি বাড়িতে রওনা দেয় সিবিআই।
সেই সঙ্গে হাওড়ার হাটগাছায় বিপ্লব সিং নামে এক ব্যক্তির বাড়িতেও তল্লাশি অভিযানে নেমেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, বিপ্লব সিং হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহকারী হিসাবে কাজ করেন।
এর পাশাপাশি, বেলগাছিয়ার জেকে ঘোষ রোডে এক ক্যাফে মালিকের বাড়িতেও এই তদন্তে অভিযান চালায় সিবিআই। সেই সঙ্গে টালায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও চলেছে সিবিআইয়ের তল্লাশি অভিযান।
আধিকারিকদের বাড়ি ছাড়াও, আরজি করের প্রশাসনিক ভবনেও হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, গত ৯ আগষ্ট মধ্য রাতে আরজি করের তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর থেকেই ওই হাসপাতালের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। সবকটি অভিযোগের আঙুল ওঠে ওই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষর দিকেই।
উল্লেখ্য, এ ব্যাপারে সন্দীপের বিরুদ্ধে সরব হন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। সংবাদ মাধ্যমের কাছে আখতার বলেন, “আরজি করের দুর্নীতির মূলে ওই সন্দীপ ঘোষ।” হাসপাতালে নানা বেআইনি কাজ এবং আর্থিক নয়ছয়ের সঙ্গে দেবাশিস সোম যুক্ত বলেও অভিযোগে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, শুক্রবার ওই দুর্নীতি মামলার তদন্তভারও সিবিআইকে দিয়েছে আদালত। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চেও গিয়েছিলেন সন্দীপ। তবে তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়নি আদালত।
উল্লেখ্য, টানা ৯দিন দিনভর সিজিও কমপ্লেক্সে প্রাক্তন অধ্যক্ষকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। এরপরই রবিবার শুরু হয় সিবিআইয়ের ঝোড়ো ইনিংস। কাউকে কি গ্রেফতার করা হবে, বা সামনে আসবে কোনও নতুন তথ্য, এখন সেদিকেই নজর সবার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*