জীবিত অবস্থায় তিনি নিজে আসতেন জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে। প্রয়াণের পরও একইভাবে কিংবদন্তি শৈলেন মান্নার জন্মদিন পালনের ধারা অব্যাহত রাখল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ক্রীড়া প্রশাসক স্বপন (বাবুন) বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে ময়দানের প্রিয় ‘মান্নাদা’-র ৯৪তম জন্মদিন উদ্যাপনে উত্তম মঞ্চের অনুষ্ঠানে ছিল চাঁদের হাট। তারই ফাঁকে রাজ্যে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যার্থে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য ক্লাবের তরফে একান্ন হাজার টাকার চেক ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে তুলে দেওয়া হলো। অরূপবাবু বলেন, রাজ্যে বেশ কয়েকটি ফুটবল আকাদেমি রয়েছে, সেখান থেকে ভবিষ্যতে আরেকটা শৈলেন মান্না তুলে আনতে পারলেই এই অনুষ্ঠান সার্থক হবে। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ফুটবলার শৈলেন মান্নার কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি যেভাবে উঠতি ফুটবলারদের প্রকৃত শিক্ষকের মতো শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতার গুরুত্ব বোঝাতেন তা ছিল অনবদ্য। ক্রীড়া রাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা বলেন, শুধু ফুটবলারদের কাছেই নন, শৃঙ্খলা-অনুশাসন-সহ নানা বিষয়ে ধীর স্থির শৈলেন মান্না সকল ক্রীড়াব্যক্তিত্বের কাছেই বড়ো আইডল। স্মৃতিচারণে উঠে আসে, শৈলেন মান্নার খেলায় মুগ্ধ হয়ে একবার ইংল্যান্ডের রানি শৈলেন মান্নার পায়ে হাত দিয়ে যাচাই করেছিলেন এটি আসল না নকল পা। তাঁর বাড়িতে গিয়ে শৈলেন মান্না কীভাবে তাঁকে মোহনবাগানে সই করিয়েছিলেন সে কথা জানিয়ে প্রাক্তন ফুটবলার তথা কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, কলকাতায় শৈলেন মান্নার নামে একটি রাস্তা থাকলে ভালো হয়। আর এআইএফএফ বা আইএফএ-র উচিত শৈলেন মান্নার নামাঙ্কিত একটি ট্রফি চালু করা। যুবভারতীতে শৈলেন মান্নার একটি মূর্তি বসাতে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানান মোহনবাগানের অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন, বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, শৈলেন মান্নার কন্যা নীলাঞ্জনা মান্না, সিএবি-র যুগ্ম সচিব অভিষেক ডালমিয়া, সিএবি-র প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে, আইএফএ সভাপতি সুব্রত দত্ত, মোহনবাগানের ফুটবলার কামো, ইস্টবেঙ্গলের আমনা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ক্রীড়াবিদদের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পদ্মশ্রী শৈলেন মান্না কৃতী সম্মান প্রদান করা হয়। এদিনই বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠে প্রতিবারের মতো শৈলেন মান্নার জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিধায়ক সুজিত বসু, বিধানগর পৌর নিগমের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী প্রমুখ। পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ প্রাক্তন ফুটবলাররাও শৈলেন মান্নার স্মৃতিচারণে অংশ নেন। দশটি ফুটবল কোচিং সেন্টারকে জার্সি ও ফুটবল দেওয়া হয়।
Be the first to comment