অমৃতা ঘোষ:-
দেশের সর্বকনিষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি বরণ করে নিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম বসু (Khudiram Bose)। ১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট মুজফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসি হয় ওই মহান বিপ্লবীর, তখন খাতায় কলমে তাঁর বয়স মাত্র ১৮ বছর। তারুণ্যেই যে প্রাণকে ঝরে যেতে হলো, তাঁর শরীরের মৃত্যু হলেও অমর হয়ে থেকে গেলেন প্রতিটি ভারতবাসীর মনের মণিকোঠায়। আরেক বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকিকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষুদিরাম বসু ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। একটি গাড়িতে ওই ব্রিটিশ বিচারক সওয়ার রয়েছেন ভেবে গাড়িটি লক্ষ্য করে বোমাও ছুঁড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু হিসেবের গড়মিলে এই প্রয়াস ব্যর্থ হয় দুই বিপ্লবীর। কারণ যে গাড়িটি লক্ষ্য করে তাঁরা বোমা ছোঁড়েন তাতে ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড ছিলেন না, ছিলেন দুই ব্রিটিশ মহিলা মিসেস কেনেডি ও তাঁর কন্যা। গাড়িতে বোমা এসে পড়লে দুই মহিলারই মৃত্যু হয়। এরপরেই প্রফুল্ল চাকি গ্রেফতার হওয়ার অনুমান করে আগেই আত্মহত্যা করেন। কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ক্ষুদিরাম বসু। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয় এবং তিনি হাসতে হাসতে মৃত্যুবরণ করেন।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে ক্ষুদিরাম বসুকে ফাঁসি দেওয়া হয় মুজফফপুর সংশোধনাগারে। বর্তমানে সেই কারাগারের নাম বদলে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর নামেই নামকরণ করা হয়েছে।
ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরের কাছাকাছি (বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ছিলেন নাড়াজোলের তহসিলদার।তাঁর মার নাম লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। তিন মেয়ের পর মায়ের চতুর্থ সন্তান ক্ষুদিরাম। দুই ছেলে অকালে মৃত্যুবরণ করেন, তাই ছোট ছেলের মৃত্যুর আশঙ্কায় লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তাকে তাঁর বড়ো দিদির কাছে তিন মুঠো খুদের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে পরবর্তী সময়ে ক্ষুদিরাম নাম রাখা হয় তাঁর।
Be the first to comment