১০০ বছরের অধিক সময় ধরে মাদুর তৈরি করে চলেছেন শিল্পীরা..

Spread the love

জয়দীপ মৈত্র : শুধুমাত্র বংশপরম্পরায় ১০০ বছরের অধিক সময় ধরে আজও মাদুর কাঠি চাষ ও মাদুর তৈরি করে চলেছেন ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের কুশকারী এলাকার পীরপুকুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী পঞ্চায়েত সহ ব্লক এলাকার বিভিন্ন জায়গাতে বিশেষ করে হরিরামপুর, কুশকারী, ধুমশাদীঘি সহ বিভিন্ন গ্রামে বংশপরম্পরাকে প্রাধান্য দিয়ে আজও মাদুর শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য কার্যত রোজগারের লক্ষ্যে কুশকারী পীরপুকুর গ্রামের প্রায় শতাধিক দেবনাথ পরিবারের সদস্যরা মাদুর তৈরি করে চলেছেন। জানা গেছে, এই এলাকার প্রত্যেকটি বাড়ির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের নিজস্ব জমি বা অন্যের জমি চুক্তি করে নিয়ে মাদুরকাঠির চাষ করে মাদুর তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করছেন। আর এতেই তাদের লক্ষ্মীর ভার পূর্ণ হচ্ছে তথাকথিতভাবে মাদুর তৈরি করে সেই আয়ের টাকায় সংসার চলে এই এলাকার শতাধিক পরিবারের। উল্লেখ্য, প্রতিবছর ফাল্গুন চৈত্র মাসে জমিতে মাদুরকাঠির চাষ করা হয় এবং আশ্বিন কার্তিক মাসে সে মাদুর কাঠি জমি থেকে কেটে বাড়িতে তোলা হয়। এবং একবার বছরে জমিতে বীজ বপন করলে তা তিন বছর আর করার প্রয়োজন পড়ে না সেই বীজেই নতুন মাদুরকাঠি থেকেই তারা মাদুর কেটে মাদুর তৈরি করে বাজারজাত করে বাজারে বিক্রি করবার জন্য প্রস্তুত করে।প্রতিদিন সারাদিনে খেটে খুঁটে প্রায় আট থেকে দশটি মাদুর তৈরি করে। পাইকারি দরে ২০০ থেকে আড়াইশো টাকা হিসেবে বিক্রি করা হয় বিভিন্ন হাটে বাজারে। তথাকথিতভাবে মাদুর শিল্পকে বাঁচাবার জন্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশকারী এলাকার পীর পুকুরের প্রায় শতাধিক পরিবার মাদুর শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বংশ পরম্পরায় চলে আসা কার্যের মধ্য দিয়ে তা বলায় বাহুল্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও কোনরকম সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি বলে অভিযোগও করেন ওই এলাকার একাংশ মাদুর শিল্পীরা। এই বিষয়ে মাদুর শিল্পী সুশীল দেবনাথ( ৬০) জানান, “বাপ ঠাকুরদার আমল থেকে চলে আসা ব্যবসাকে টিকিয়ে রেখেছি বংশপরম্পরার মধ্যে দিয়ে তবে বাজারে জিনিসের দ্রব্যমূল্য হওয়ার ফলে আমাদের মাদুর তৈরি করা চাষ করা বড় দুষ্কর হয়ে উঠেছে কোনরকম কোনরূপ সরকারী সহযোগিতা না পাওয়ায় খুবই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা তথা এই মাদুর শিল্পীরা। পাশাপাশি এই মাদুর তৈরি করবার জন্য নারান রকম রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয় কিন্তু তা প্রাকৃতিক নিয়মে এরপর সেগুলো কেটে নিয়ে এসে বাড়িতে মাদুর তৈরি করা হয় বিভিন্ন হাটে বাজারে বিক্রি করা হয় পাইকারি দরে তাছাড়াও বছরের একটা লাভের অংশ আসলেও সেখান থেকে জিনিসের দ্রব্যমূল্য হওয়ার জন্য খরচায় হয় বেশি সরকারি সহযোগিতা পেলে খুব উপকার হত। এছাড়াও মাসে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার বা কুড়ি হাজার টাকা লাভ হলেও এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে খুব কষ্টে দিন গুজরান করতে হয়। সরকার যদি ওই একবার আমাদের মত এই মাদুর শিল্পীদের দিকে নজর দিতেন তাহলে খুব উপকৃত হতাম”। সর্বশেষে বলাবাহুল্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুসকারী এলাকার বিভিন্ন গ্রামের এই মাদুর শিল্পীরা বংশপরম্পরার টানে আজও নস্টালজিয়া এই মাদরশিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় তা যারপরনাই ভাবে বলা যেতে পারে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*