আবহাওয়ার ভোল বাদল, কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা ? কেমন থাকবেন আপনারা এবং কেমন রাখবেন শিশুদের..

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :- এ বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা চলছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানা ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার দাপট। ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গি ভাইরাস এত বেশি ছড়াচ্ছে যে এখন জ্বর এলেই চিন্তা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বর হলেই অযথা আতঙ্কিত হবেন না। ডাক্তারকে না জিজ্ঞেস করে মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক ও খাবেন না। এমন পরিস্থিতিতে কী কী করা উচিত তা বিস্তারিত বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, দেড় থেকে বছর দশেক। প্রধানত এই বয়সসীমার বাচ্চারা জ্বরে ভুগছে এখন। জ্বরের (Fever) মূলত দু’টো কারণ। এক, ভাইরাসের আক্রমণ। যাকে আমরা বলি ভাইরাল ফিভার। দুই, ব্যাকটেরিয়ার হানা বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। নাম না জানা একাধিক ভাইরাস আছে, যাদের কারণে আমরা জ্বরে ভুগতে পারি। এর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি নেই। যার যেমন উপসর্গ, সেইমতো ওষুধ।
প্রথমেই সাবধানতা মেনে চলতে হবে৷ আবহাওয়ার খামখেয়ালের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে শরীর বেগড়বাঁই করতে আরম্ভ করে অনেক সময়ে, তাই জ্বর হলেই ধরে নেবেন না যে অ্যাডেনো বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। মনে রাখবেন, ভাইরাল ফিভার হলে সাধারণত জ্বরের সঙ্গে মাথা-গা-ঘাড় ও চোখের পিছনে তীব্র ব্যথাভাব থাকে। ক্লান্তিও থাকে। তবে হ্যাঁ, যদি জ্বর কমতে না চায় এবং শুকনো কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে তখন টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি।
জ্বর (fever) আসার দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে বেসিক রক্তপরীক্ষাগুলি করান। জ্বর আসার সঙ্গে সঙ্গে রক্তপরীক্ষা করালে সমস্ত রিপোর্টই নেগেটিভ আসার সম্ভাবনা বেশি৷ ‘বেসিক পরীক্ষা’ মানে আগে রুটিন ব্লাড কাউন্ট দেখা দরকার৷ তা থেকেও বোঝা যায় যে ভাইরাল ফিভার হয়েছে বা ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ আছে৷
শিশুদের জ্বর, সর্দিকাশি, শ্বাসের সমস্যার মূল কারণ ‘হিউম্যান রেসপিরেটরি সিন্সিটিয়াল ভাইরাস’ বা আরএসভি ভাইরাস। সদ্যোজাত থেকে পাঁচ বছর বয়স অবধি শিশুরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জন্মের এক মাস পর থেকেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হতে দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি ভোগে ৩ থেকে ৬ মাসের শিশুরা। যে সব শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি খুব দুর্বল অথবা জন্মের পরে হার্ট বা ফুসফুসের কোনও ত্রুটি থাকে, তাদের ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।
কী কী লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন বাবা-মায়েরা?

১. তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলেই সাবধান হতে হবে। দেখবেন, সর্দিকাশি কমছেই না। শিশুর শ্বাস নিয়ে কষ্ট হচ্ছে। শ্বাস নেওয়ার সময়ে বুকে শোঁ শোঁ শব্দ হচ্ছে। সেই সঙ্গেই ঘন ঘন পেটখারাপ, বমি, গায়ে, হাত, পায়ে ব্যথা হচ্ছে।

২. বাবা-মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে, শিশুর শ্বাসকষ্ট বাড়ছে কি না। যদি দেখেন, শিশু মুখ দিয়ে শ্বাস নিচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৩. শিশুর প্রস্রাব ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা-ও নজরে রাখতে হবে। প্রস্রাব যদি দিনে পাঁচ বারের কম হয়, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ভাইরাস থেকে বাঁচতে বাবা-মাকেও কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, শিশুদের সব সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন। বাইরে থেকে এলে হাত ধুয়ে তবেই শিশুর কাছে যান বা শিশুর জিনিসপত্র ধরুন। বাড়িতে কারও শ্বাসজনিত সমস্যা হলে কিংবা ঠান্ডা লাগলে তার থেকে শিশুকে দূরে রাখতেই হবে। খুদের ব্যবহারের জিনিসগুলি ভাল করে পরিষ্কার করতে হবে। জামাকাপড় রোদে শুকোনোই ভাল। জ্বর, সর্দিকাশি না কমলে নিজে থেকে ওষুধ খাওয়াতে যাবেন না। কোনও রকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না শিশুদের। শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই ওষুধ খাওয়াতে হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*