রোজদিন ডেস্ক :-
এবছর অতি বৃষ্টির কারনে, তৎসহ ডি ভি সি – র জল ছাড়ার ফলে হাওড়ার আমতা, এবং উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান বিধায়ক সুকান্ত পাল এবং মন্ত্রী পুলক রায়।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। ডিভিসির ছাড়া জলে আমতা ২ নং ব্লকের দ্বীপাঞ্চল ভাটোরার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়। মঙ্গলবার রাত থেকে দামোদরের বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে উদয়নারায়নপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাও। সোমবার রাত থেকেই মুণ্ডেশ্বরীর জলে প্লাবিত হয়েছিল ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।
বুধবার ভাটোরার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এদিন সকাল থেকে দ্বীপাঞ্চলের কোথাও এক কোমর, কোথাও গলা পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে যায়। সেই জল ঠেলেই মানুষকে বিভিন্ন কাজে বেরতে হচ্ছে। কয়েকটি জায়গায় নিজেদের উদ্যোগে নৌকা নামিয়ে কাজ চালাচ্ছেন এলাকার মানুষ। এদিন মুণ্ডেশ্বরী নদীতে জলের স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল জানান, ডিভিসি যেভাবে জল ছাড়ছে, তাতে দ্বীপাঞ্চল ছাড়াও ঝিকিরা ঝামটিয়ার কিছু জায়গা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে ন’টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। এক হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে সেখানে। বিধায়ক আরও জানান, নদীতে জলের স্রোত বেশি থাকায় লঞ্চ আনা হলেও তা চালানোর মতো পরিস্থিতি নেই। স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র খোলা আছে। আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে আসছেন। বিদ্যুৎ পরিষেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে খোলা হয়েছে বিশেষ ক্যাম্প। ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সুকান্তবাবুর দাবি, বন্যায় আমতা ২ নং ব্লকের ২৩৮০ হেক্টর জমির আমন ধান ও ২০০ হেক্টর জমির সব্জি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে দামোদরের বাঁধ উপচে জল ঢুকতে শুরু করে উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
উদয়নারায়ণপুর কলেজ, হাসপাতাল, থানা চত্বর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আমতা-উদয়নারায়ণপুর, উদয়নারায়নপুর- মুন্সিরহাট, উদয়নারায়নপুর-ডিহিভুরসুট রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় কোমরসমান জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান, ডিভিসি যেভাবে জল ছেড়েছে, তাতে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত উদয়নারায়ণপুরের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৫টি গ্রামের প্রায় এক লক্ষ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন।
ব্লকের ৪৮টি ত্রাণ শিবিরে ৬ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আমতা ও উদয়নারায়ণপুরের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন এমএসএমই’র অন্যতম কর্তা রাজেশ পান্ডে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক পি দিপাপপ্রিয়া, হাওড়া (গ্রামীণ) জেলার পুলিস সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া, উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক মানসকুমার মণ্ডল সহ অন্যান্যরা। এদিক বিকেলে আমতার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান মন্ত্রী পুলক রায়। পরে তিনি প্রশাসনের আধিকারিদের সঙ্গে বৈঠকও করেন।
Be the first to comment