আরজি করের ঘটনায় হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে পুলিশ, ঘর ভাঙা নিয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল আদালত

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

বুধবার রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুর নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে এবার রাজ্য প্রশাসন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। সেমিনার হলের কাছে ঘর ভাঙা হল কেন? রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল হাই কোর্ট।
মঙ্গলবারের পর শুক্রবার আবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে শুরু হয় আরজি কর মামলার শুনানি। এদিন আরজি করের সেমিনার হলের পাশের ঘর ভাঙায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে এক জনস্বার্থ মামলা ওঠে আদালতে, সেই মামলার প্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বুধবার মধ্যরাতের আরজি করের হামলার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এদিন বড় প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘পুলিশ নিজেকে রক্ষা করতে পারছে না। জনতাকে ঠেকাতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা কী ভাবে রক্ষা করবে?’’
বুধবার রাতে হাসপাতালে হামলা নিয়েও এদিন এক জনস্বার্থ মামলা ওঠে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। ওই মামলাতেই এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, মামলায় তদন্তের স্বার্থে সিবিআই যা যা মনে করবে তাই করতে পারে। আন্দোলনকারীদেরও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিন শুনানিতে রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, বুধবার রাতে হঠাৎ করে হাজার সাতেক মানুষ হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। ফলে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। তাতে হাই কোর্টের পালটা প্রশ্ন, কোথাও ১০০ মানুষের জমায়েত হলেও পুলিশের জানার কথা। সেখানে এত মানুষ জড়ো হল অথচ পুলিশ জানল না? আগে থেকে গোটা ঘটনাস্থল কেন নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হল না?
আর জি করের সেমিনার হলের কাছের ঘরটি ভাঙা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, ওই ঘর ভাঙার এত তাড়াহুড়ো কীসের? এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছে, এই পরিস্থিতিতে আপনারা সেখানে ডিস্টার্ব করছেন!” রাজ্য সরকার এদিন আদালতে দাবি করেছে, যে সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই স্থান সুরক্ষিত রয়েছে। রাজ্যকে এই মর্মে হলফনামা দিতে বলেছে হাই কোর্ট। হামলার ফলে হাসপাতালের কোন অংশ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটা নিয়ে হলফনামা দেবে রাজ্য।
একই সঙ্গে মৃত চিকিৎসকের নাম এবং ছবি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করলেন বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা অনুরোধ করছি মৃতাকে যাঁরা চেনেন তাঁরা তাঁর নাম এবং ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন না। সংবাদমাধ্যমও কোথাও তা প্রকাশিত করতে পারবে না। এটা করা যাবে না, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে।’’
পাশাপাশি শুক্রবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন আদালতে। আইনজীবী বলেছেন, ‘‘আমার মক্কেলকে নিরাপত্তা দেওয়া হোক। সিবিআইয়ের সঙ্গে আমরা সহযোগিতা করেছি। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় বাহিনী, যে কোনও সংস্থাকে নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দিক আদালত।’’
এর পর আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনি তো প্রভাবশালী ব্যক্তি। আপনার সঙ্গে রাজ্য রয়েছে। কেন আবার নিরাপত্তা চাই? বাড়িতেই থাকুন। শান্তিতে থাকুন। না হলে বলুন, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে দিচ্ছি।’’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*