চিরন্তন ব্যানার্জি :- কেন্দ্রীয় বাজেটে কোনও রাজ্যকে বঞ্চিত করা হয়নি বলে জবাবি ভাষণে মঙ্গলবার সংসদে বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নির্মলার সেই বক্তব্যের পাল্টা শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জোরালো করল তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, তথ্যপ্রযুক্তির এত অগ্রগতি সত্ত্বেও কেন 100 দিনের কাজের শ্বেতপত্র দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার ৷ একইসঙ্গে বাংলার শাসকদল দাবি করল, ১০০ দিনের কাজে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি।
বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং কুণাল ঘোষ। ১০০ দিনের কাজে টাকা না-দেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব মমতার দল। এই নিয়ে দিল্লিতে আন্দোলনও করেছে জোড়াফুল শিবির। এবার সেই ১০০ দিনের টাকা নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হল তৃণমূল। এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই তাঁরা দাবি করেন, বিজেপি 100 দিনের কাজ নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে মিথ্যাচার করছে। তৃণমূল এর বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানাচ্ছে বলেও দাবি করেন চন্দ্রিমারা। লোকসভা নির্বাচনের আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গরিব মানুষদেরকে নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধে শ্বেতপত্রের দাবি তুলেছিলেন। এরপর 3400 ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এই নিয়ে কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। উলটে তারা মিথ্যাচার করছেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
এদিন কুণাল বলেন, ‘মোদী সরকারের রিপোর্টে ১০০ দিনের কাজে বাংলা প্রথম স্থানে রয়েছে। ভোটে হারের জন্য টাকাটা বন্ধ করল। দ্বিচারিতা করা হচ্ছে। তৃণমূল কখনও বৈষম্য করে না। বাংলায় হেরেছে বলে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বাংলার বকেয়া কই, ১০০ দিনের টাকা কই? এটা তো মানুষ বলবে এবার।’ কুণাল আরও বলেন, ‘বাংলার মাটি থেকে কর নিয়ে যাচ্ছেন। তা হলে বাংলাকে তার প্রাপ্য দেবেন না কেন? বাংলা শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বঞ্চিত।’ এদিন তিনি আরও বলেন, “সবচেয়ে বেশি ভুয়ো জব কার্ড পাওয়া গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং ওড়িশা থেকে। এরপরেও তাদের কোনও অর্থ বন্ধ হয়নি ! একমাত্র বঞ্চিত হচ্ছে বাংলা। 2021 সালের পর বাংলাকে এই প্রকল্পের একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 100 দিনের কাজে রাজ্যের তরফ থেকে তহবিল তৈরি করে গরিব মানুষের টাকা দিচ্ছেন। আর কেন্দ্রীয় সরকার তা নিয়ে মিথ্যাচার করছে।” রাজ্যের অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, “আমরা বারবার বলছি, বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা এই মুহূর্তে 100 দিনের কাজ ও আবাস যোজনার কেন্দ্রীয় শেয়ার পাচ্ছি না। ইতিমধ্যেই 1.71 লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বাংলার।” তিনি এদিন এও বলেন, “আমরা এই বকেয়ার দাবিতে বারবার আন্দোলন বিক্ষোভ করছি। তবুও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বাংলাকে। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায় যথার্থই বলেছেন, বাংলাকে কত টাকা দেওয়া হলো তা নিয়ে শ্বেতপত্র দেওয়া হোক।
এদিন তৃণমূল ভবন থেকে কটাক্ষ করে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বাজেট নিয়ে 100 মিনিট ধরে সংসদে বক্তব্য রাখছেন। কিন্তু বাংলার দাবি নিয়ে একটি কথাও বলছেন না।
Be the first to comment