রোজদিন ডেস্ক :- রবিবার রাত থেকে ঝড় এবং বৃষ্টিতে নাজেহাল কলকাতা। দুর্যোগের কারণে সোমবার সকাল থেকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল করছিল না। অবশেষে প্রায় ১০ ঘণ্টা পরে শিয়ালদহ দক্ষিণে ট্রেন চলা শুরু হল। প্রথমে ক্যানিং লোকাল ছাড়ার ঘোষণা হয়েছে।
স্টেশনে এবং ট্রেনে থিকথিকে ভিড়। রেললাইনে গাছ পড়ে থাকায় সকাল থেকে পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হয়েছিল ট্রেন পরিষেবা। অবশেষে কিছুটা স্বস্তিতে যাত্রীরা।
ট্রেনের পাশাপাশি মেট্রো পরিষেবাও ব্যাহত সকাল থেকে। সপ্তাহের প্রথম দিনে সকাল সকাল যাঁরা মেট্রোর ভরসায় বেরিয়েছিলেন, তাঁরাও ভোগান্তির মুখে। সোমবার সকালে মেট্রো স্টেশনে ঘোষণা হয়, দক্ষিণেশ্বর থেকে গিরিশ পার্ক এবং টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করবে। মাঝের স্টেশনগুলিতে জল ঢুকে যাওয়ায় পরিষেবা সচল রাখা যায়নি।
এমনিতেই ঝড়ের কারণে সোমবার সকাল থেকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। আগেই সেই ঘোষণা করে দিয়েছিল রেল। তবে কিছু ট্রেন চলার কথা ছিল। সকাল থেকে তা-ও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন যাত্রীরা। আপাতত ট্রেন চলা শুরু হলেও ভিড় ট্রেনে গাদাগাদি করে তাঁদের যেতে হচ্ছে। যেগুলি বাতিল করা হয়েছিল, সেগুলি বাতিলই থাকছে।
সূর্যের মতো অনেক যাত্রীই রবিবারের রাত থাকেন বিমানবন্দরের ম্যানেজারের ঘরের সামনের লাউঞ্জে। সেই সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের হিরণ বিশ্বাসের। ঘুরতে এসেছিলেন কলকাতায়। রবিবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের উড়ানে ঢাকা ফেরার কথা ছিল। দুপুর ১টায় বিমানবন্দর পৌঁছে জানতে পারেন, সব বন্ধ। খবরের কাগজ ও টিভিতে দেখেননি যে বিমানবন্দর বন্ধ— এ প্রশ্নের উত্তরে হিরণ বলেন, ‘বেড়াতে এসে কি টিভি দেখব না খবরের কাগজ পড়ব? আবহাওয়া তো খারাপ কিছু ছিল না। তা হলে কেন উড়ান ছাড়া হল না? আমাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবারের উড়ানে। এখন আপনাদের শহরে সস্তার হোটেল খুঁজতে হবে।’
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভির যুক্তি, ‘এটা তো আমাদের একার সিদ্ধান্ত নয়। বৈঠকে আবহাওয়া দফতর যা বলেছে, তার ভিত্তিতে উড়ানসংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে দুপুর ১২টা থেকে বিমানবন্দর বন্ধ করা হয়েছে।’ কিন্তু, দুপুরে তো অবলীলায় উড়ান চালানো যেত। অধিকর্তার দাবি, ‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বিমানবন্দরে হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩৫ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৬৫ কিলোমিটার)। উড়ান ওঠানামায় অসুবিধা হত।’
রবিবার সবমিলিয়ে কলকাতা প্রায় ৩৯৪টি উড়ান বাতিল হয়েছে বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। যার জেরে সারা দেশের উড়ানসূচি বদলাতে হয়েছে উড়ানসংস্থাগুলিকে। কর্তৃপক্ষ জানান, রবিবার সকালে বারানসী থেকে কলকাতায় শেষ উড়ান নামে সকাল ১১টা ৯ মিনিটে। তার আগে রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৪০ উড়ান শহরে নেমেছে আর ৩৯টি উড়ান শহর ছেড়ে উড়ে গিয়েছে। তারপর থেকে খাঁ খাঁ বিমানবন্দর।
Be the first to comment