রাত পোহালেই ১০৮ টি পুরসভায় নির্বাচন। এই পুরসভা নির্বাচন ঘিরে শাসক বিরোধী শিবিরের প্রতিরোধ তুঙ্গে। তবে শুধু তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ নয়। ১০৮ টি পুরসভার নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল অন্দরেও কম জলঘোলা হয়নি। প্রথমে দুইবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বিক্ষোভ বাধে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর লাগাতার ক্ষোভের মুখে পড়েছে শাসকদল। পথে নেমে বিক্ষোভও দেখান বিক্ষুব্ধরা। প্রার্থী তালিকাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের ঘরের আগুন নেমে এসেছিল রাস্তায়। দলের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন একাধিক তৃণমূল নেতা। নির্দল প্রার্থীদের উপর মহল থেকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল মনোয়ন প্রত্যাহার করার জন্য। কেউ কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
কেউ আবার মনোনয়ম প্রত্যাহার না করায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তৃণমমূলের অন্দরের এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল ১০৮ টি বিধানসভায় নির্বাচন। তাই নির্বাচনের দুইদিন আগে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হল তৃণমূলের তরফে। তৃণমূল কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি বিরোধীদের ‘নাটক’ থেকে বেঁচে চলার সতর্কবার্তা দেওয়া হল।
নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বদের কাছে। তৃণমূল মুখপাত্র ‘জাগো বাংলা’ তেও এই নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই নির্দেশিকায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ” বিরোধীদের প্ররোচনায় পা দেবেন না৷ প্রচারে থাকতে দিনভর নাটক করতে পারে। কোনওভাবে তাঁদের প্ররোচনায় পা না দিয়ে নেতৃত্ব বা পুলিশকে জানান।” আগামিকাল নির্বাচন। প্রচার পর্ব শেষ হলেও তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের কোনও ঢিলেমি দিতে বারণ করা হয়েছে। তৃণমূল কর্মীদের সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “প্রতি বুথে যথাযথভাবে স্থানীয় এজেন্ট রাখুন। যে বা যাঁরা এলাকার ঠিকানা ধরে ধরে সব ভোটার ও বাড়ি চেনেন তাঁদের বসান এজেন্ট হিসেবে। দলের ক্যাম্প অফিসেও স্থানীয় পরিচিত সক্রিয় কর্মী রাখুন। ভোটারদের উৎসাহিত করতে হবে। তারা যেন এসে ভোটটা দিয়ে যায়। পরে অন্য কাজ হবে।” গত পুরনিগম নির্বাচনে বুথ জ্য়াম, ভুয়ো ভোটার নিয়ে বিজেপির নিশানায় ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পুরনিগম নির্বাচনে অশান্তির অভিযোগ নিয়ে বিজেপি সরব হয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
এই পুরসভা নির্বাচনে সেই ধরনের অভিযোগ এড়াতে তৃণমূলের জেলা স্তরের কর্মীদেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশিকায় সেই উদ্দেশে বলা হয়েছে, “অবাধ, গণতান্ত্রিক পরিবেশে উৎসবের মেজাজে যেন ভোট হয়। কাজ ও পরিষেবার ভিত্তিতে তৃণমূলকে ভোট দেবে মানুষ। বাড়তি ভোটের জন্য অতি উৎসাহে এমন কিছু করবেন না যা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। কর্মীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, এটা মিডিয়া ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। হাতে হাতে ক্যামেরা। এমন কোনও আচরণ করবেন না যা নিয়ে পরবর্তী সময়ে কুৎসা হতে পারে।” এই নির্দেশিকায় কর্মীদের আরও বার্তা দেওয়া হয়েছে, ” আত্মবিশ্বাস ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কেউ দেখাবেন না। বুথ বা ক্যাম্প ছেড়ে যাবেন না। শেষ সময় অবধি অপেক্ষা করুন।” উল্লেখ্য, গতকাল তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতা ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ এই একই বার্তা দিয়েছিলেন।
Be the first to comment