রোজদিন ডেস্ক (২৫ জুলাই) :-
ট্রেকিং করতে গিয়ে বাবা ও মেয়ের মধ্যে চোখের সামনে মৃত্যুর কবলে ঢলে পড়লেন মেয়ে। এ যেন এক অবিশ্বাস্যকর ঘটনা, তবে হামেশাই এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা অসাবধানতায় কম বেশি ঘটে চলেছে। বাবার সঙ্গে হাইকিংয়ে গিয়েছিলেন ২০ বছরের কলেজছাত্রী। বাবার চোখের সামনেই ২০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে মারা গেলেন তিনি। পড়ে যাওয়ার আগে বাবাকে বারবারই বলেছিলেন, ‘বাবা, নতুন জুতোটা ভীষণ পিছলে যাচ্ছে।’ সেই নতুন জুতোই যে কাল হবে, এমন মর্মান্তিক পরিণতি হবে আদরের মেয়ের, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি বাবা।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ছিলেন গ্রেস রোহলফ। তিনি ও তাঁর বাবা জোনাথন– দু’জনেই অভিজ্ঞ পর্বতারোহী ছিলেন। একসঙ্গে বহু পাহাড়ে ট্রেক করেছেন এই বাবা-মেয়ে জুটি। এবার তাঁরা গিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কে। হাঁটার সময়ে শুরু হয়েছিল ঝড়বৃষ্টি। তাতেই ভিজে গিয়েছিল ট্রেল এবং পা পিছলে পড়ে মারা গেলেন গ্রেস।
জানা গেছে, সব হাইকাররাই বিপদে পড়েছিলেন বৃষ্টিতে। হাঁটতে সমস্যা হচ্ছিল পিচ্ছিল ট্রেলে। সে সময়ে অন্যদের সাহায্যও করছিলেন গ্রেস-জোনাথন, সে জন্য তাঁদের গতি একটু কমে গিয়েছিল। সে সময়েই গ্রেস তাঁর বাবাকে বলেছিলেন, ‘বাবা, নতুন জুতোটায় ভীষণ পা স্লিপ করছে আমার।’ বলতে বলতেই তিনি পিছলে পড়ে যান খাদে। বাবা জোনাথনের চোখের সামনেই। তবু কিছুই করার ছিল না তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে নামার চেষ্টা করলেও, খাড়া পাথরের ঢালে তা সম্ভব হয়নি। অসহায়ের মতো চিৎকার করতে থাকেন জোনাথন, ‘গ্রেস, আমি এখানে আছি। আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না। তুমি আমার গলা শুনতে পাচ্ছো কি? তাহলে সাড়া দাও প্লিজ… আমি তোমাকে ভালবাসি…।’ এর পরেই ৯১১ এমার্জেন্সি নম্বরে ফোন করেন জোনাথন। উদ্ধারকারী দল এসে পৌঁছয় কিছুক্ষণে। কিন্তু খাদ বেয়ে গ্রেসের কাছে পৌঁছতেই ঘণ্টা তিনেক সময় লেগে যায় তাদের। শেষমেশ হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হয় গ্রেসকে। কিন্তু ততক্ষণে মাথায় চোট পেয়ে মারা গিয়েছেন তরুণী।
এই প্রথম নয়, ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কে আগেও এমনটা হয়েছে। হাফ ডোমের মতো আকৃতির ট্রেকিং ট্রেলটি বৃষ্টিতে পিছল হয়ে গেলে তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ২০০৬ সাল থেকে এই পর্যন্ত অন্তত ছ’জন ট্রেকার গ্রেসের মতোই পড়ে মারা গেছেন এই ট্রেলে। ট্রেলটির নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখতে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন কন্যাহারা বাবা জোনাথন।
Be the first to comment