বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল, পালটা দলবদলে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। একসময় শুভেন্দুর আস্থাভাজন তথা পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে। মাত্র দু’মাস আগে গেরুয়া শিবিরে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু “ভুল” বুঝতে পেরে ফের পুরানো দলে ফিরে এলেন তিনি। আর সিরাজের প্রত্যাবর্তন শুভেন্দু তথা বিজেপিকে খানিক ধাক্কা দিয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও দু’এক জনের দলবদল নিয়ে চিন্তিত নয় বিজেপি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিতি ছিল সিরাজ খানের । সেই সিরাজ গেরুয়া ছেড়ে ফের সবুজ রং ধরেছেন । দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের আগেই নাকি তৃণমূল দলটা সাফ হয়ে যাবে । সেইমতো একে একে বহু সাংসদ-বিধায়ক, জেলা-ব্লক স্তরের নেতাকে নিজেদের দলে টানতে সক্ষম গেরুয়া শিবির । শুভেন্দুর গড়ে একে একে বহু নেতা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন । ঠিক সেইসময় পালটা চাল চালল তৃণমূল । সিরাজ খানকে দলে ফেরানো, তৃণমূলের বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
দু’মাস আগে যখন বিজেপিতে যোগ দেন তখন সিরাজের অভিযোগ ছিল, তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হয়না । তিনি কাজের লোক । মাছ চাষের অভিজ্ঞতা থাকলেও তাঁকে জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পদ দেওয়া হয় । এখানেও তিনি শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই আঙুল তুলেছিলেন ।
সিরাজের অভিযোগ, খাদ্য দপ্তরের একাধিক দুর্নীতি তিনি হাতেনাতে ধরে ফেললেও তৃণমূলের নেতৃত্ব ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাননি । ফলে দোষীদের কোনও শাস্তি দিতে পারেননি । অথচ আজ তৃণমূল ভবনে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নেওয়ার পর তাঁর গলায় অন্য সুর । এবারেও অবশ্য অভিযোগের তির শুভেন্দুর দিকেই । সিরাজ বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর জন্য যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি বঞ্চিত । ২০১১ সাল থেকে বিধানসভার টিকিট দেওয়ার কথা থাকলেও শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারী তা হতে দেননি ।
নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন সিরাজ । তাই শুভেন্দুর যোগদানের পর ফের “গরিবের দল” তৃণমূলে ফিরলেন তিনি । এই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “বিজেপি বড়লোকের দল । আমি ছোট-খাটো মানুষ । সাধারণ মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে চাই । শুভেন্দু অধিকারী আবার বিজেপিতে গিয়েছেন । ফলে আমার মতো মানুষের জায়গা হবে না ।
যদিও সিরাজের দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য নীলাঞ্জনা অধিকারী । তাঁর দাবি, বিজেপি নীতি আদর্শ ও কার্যপদ্ধতি মধ্য দিয়ে চলে । সেখানে সবাই মানিয়ে নিতে পারে না। যারা পারে তারা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় এই দলে । উনি হয়তো ওনার ব্যক্তিগত কারণে দলের কার্যপদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি । অল্প দিনের জন্য এসেছিলেন । এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না ।
Be the first to comment