রোজদিন ডেস্ক :- লোকসভা ভোটের প্রচারপর্ব মিটতেই কন্যাকুমারী গেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানের বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে ৪৫ ঘণ্টার ধ্যানে বসেছিলেন তিনি। ধ্যান শেষে বিমানে ফেরার পথে দেশবাসীর উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন মোদী। তাঁর লেখায় একদিকে তিনি গোটা লোকসভা ভোটের প্রচারের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন, অন্যদিকে আগামী দিনের ভারতের জন্য নতুন কী সংকল্প নেওয়ার কথা ভাবছেন, সেটাও জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
দেশবাসীর উদ্দেশে খোলা চিঠিতে মোদী লিখছেন, ”লোকসভা ভোট শেষ হয়েছে। আমার মধ্যে এখন সীমাহীন এনার্জি। এতদিন প্রচার পর্বের প্রতিটা অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতা আমার চোখের সামনে ভাসছে। ভোটের প্রচারের সময়ে অজস্র মুখের ভিড় দেখেছি, নারী শক্তি অনুভব করেছি, মানুষের আশীর্বাদ আমি পেয়েছি। এত ভালবাসা পেয়ে আমার চোখ ছলছল করেছে। তবে ধ্যানে বসার পর আমি যেন বাহ্যিক জগত থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিলাম।” এই চিঠিতে মোদীর কথায় একাধিকবার উঠে এসেছে স্বামী বিবেকানন্দের নামও।
মোদী জানিয়েছেন, বিশাল দায়িত্বের মাঝে এত ঘণ্টা ধরে নীরবে ধ্যান করা চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে স্বামীজির অনুপ্ররণায় তা করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। মোদী বলছেন, ”আমি নিশ্চিত স্বামীজিরও ধ্যান করার সময়ে এমন ভাবনা এসেছে।” এই চিঠিতেই করোনাকাল থেকে শুরু করে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রসঙ্গও তুলেছেন নরেন্দ্র মোদী। বিবেকানন্দর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ”প্রত্যেক দেশের কিছু বলার থাকে, একটা গন্তব্য থাকে। আর এখন তো ভারতের প্রশাসনিক মডেল বিশ্বের অনেক দেশের কাছে মডেল হয়ে উঠেছে। করোনাকালেও ভারত যেভাবে লড়াই করেছে তাও বহু দেশকে অনুপ্রাণিত করেছে।” মোদীর কথায়, ভারত আজ বিশ্বের কাছে একটা উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই চিঠিতে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার উপরে তুলে এনে সরকার নজির তৈরি করেছে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ভারতের উন্নতি শুধু এই দেশকে নয়, ভারতের ওপর নির্ভরশীল একাধিক দেশের উন্নয়ন করছে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, দেশকে ‘বিকশিত ভারত’ তৈরি করার ক্ষেত্রে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কাজ করতে হবে ‘জিরো ডিফেক্ট, জিরো এফেক্ট’ মন্ত্র নিয়ে। গতি, মাপ, পরিসর ও মান এই চারটি ক্ষেত্র বজায় রেখে আগামী দিন কাজ করার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০৪৭ সালের মধ্যে যাতে ভারত উন্নতির শিখরে পৌঁছতে পারে, সেই লক্ষ্যমাত্রাই বেঁধে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
এই প্রসঙ্গেও মোদী মনে করিয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দর কথা। বলেছেন, ”১৮৯৭ সালে স্বামীজি আগামী ৫০ বছরের জন্য দেশের জন্য কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন। দেখা যায়, ঠিক ৫০ বছর পরই ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। তাই এখন থেকে আমাদেরও পরবর্তী অন্তত ২৫ বছর দেশের প্রতি নিযুক্ত হতে হবে।” ১৪০ কোটি মানুষকে সঙ্গবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন মোদী।
Be the first to comment