নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমানে বিধানসভায় উত্তাল, ওয়াকআউট বিজেপির

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি :- নীতি আয়োগের বৈঠকে বক্তব্য রাখার সময় মনতার মাইক বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে, সোমবার বিধানসভার শুরুতেই নিন্দা প্রস্তাব আনে তৃণমূল। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন বিজেপি বিধায়কেরা ওয়াক আউট করেন। বিধানসভার বাইরে বেরিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। শাসক বিরোধী স্লোগানও তোলেন।
এদিন সকালে রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা একটি বিশেষ প্রস্তাব আনেন। সেখানে তিনি মাইক বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি জানালে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে অনুমোদন দেন।
উল্লেখ্য, বিশেষ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নীতি আয়োগের বৈঠকে যা হয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হেনস্তা। যার ফলে তাঁকে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। আলোচনার দাবি জানিয়ে আরও বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন কেবলমাত্র রাজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে। যেখানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য বিরোধী দল শাসিত রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলে ধরছিলেন। এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে এইসব রাজ্যকে বরাদ্দ না দেওয়ার কথাও বলার জন্য তিনি ওই বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন। এর পর বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মন বলেন, “তিনি আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বোঝা উচিত, যতটা সময় দেওয়া আছে, সেই মতো বলা। তাঁর টার্গেট ছিল, বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন। আবারও সুর চড়ান শংকর ঘোষ। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তা সত্যের অপলাপ।” এর পরই সুর চড়িয়ে অরূপ বিশ্বাস বলেন,”যে কথা বললেন দীপক বর্মন, তা তাকে প্রমাণ করতে হবে।” বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বাকবিতণ্ডায় জড়ান। বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আগে কোনও দিন যাননি। তিনি ওখানে ইন্ডিয়া জোটের হয়ে গিয়েছিলেন। উনি ভিতরে এসব কিছু বলেননি। উনি গিয়েছিলেন একটা সেটিংয়ের চেষ্টায়। ভিতরে যা হয়নি, সাংবাদিকদের সামনে এসে সেই মিথ্যা বলেছেন।” এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন মুখয সচেতক নির্মল ঘোষ। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের উপর প্রহার চলছে। বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে অসম্মান করলে বাংলার মানুষ মেনে নেবেন না। বাংলার মানুষ গর্জে উঠবেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর কন্ঠরোধ করা হয়েছে। একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী তিনি।” কথা কাটাকাটির মাঝে স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভা ওয়াকআউট করেন তাঁরা।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধীরা ভুলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এই হাউসের প্রধান। মুখ্যমন্ত্রী লিডার অফ হাউস। আমার এক্তিয়ারে আসলে আলোচনা করতে পারি। প্রয়োজনে প্রিভিলেজ হবে।” ফিরহাদ হাকিমও বিজেপি বিধায়কদের ওয়াকআউটের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদে তোপ দাগেন। বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, “বাংলার মানুষ যখন ঝামা ঘষে দিচ্ছেন তখন এটাই হবে স্বাভাবিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যত বাংলা নিয়ে বলবেন, তত বোধ হবে যে আমরা ভুল করেছি। সেই উসকানি যেন বেশি না হয় তাই দিদির কণ্ঠরোধ করা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলতা হ্যায় তো, দিল্লি কাঁপতা হ্যায়। লজ্জায় ওরা ওয়াকআউট করেছে।” স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনি কিছু মনে করবেন না। বিজেপি আঘাতে জ্বলছে। তাই এই যন্ত্রণা, আর্তনাদ। মন কি বাতে আমার কথা বলব। আর মানুষের কথা শুনব না।” এদিন বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ ‘মিথ্যাবাদী’ শব্দ প্রয়োগের তীব্র বিরোধিতা করেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
সোমবার এই আলোচনা এবং প্রতিবাদের মাঝেই বিধানসভায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*