বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহ নিয়ে বিরক্ত ও উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করতে পারে। দলের যে কোনও একজন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বাংলায় আসতে পারেন। দলের মধ্যে যে বিক্ষোভ চলছে তা সামাল দিতে শাসক এবং বিক্ষুব্ধ দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলার জন্যই কোনও একজন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদককে দিল্লি থেকে পাঠানো হতে পারে।
এদিকে, দলের বিদ্রোহীদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে প্রস্তুত রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। দলের বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান সুকান্ত। দলীয় সূত্রে খবর, বিক্ষুব্ধদের অনেকেই তাঁদের ক্ষোভ নিয়ে সুকান্তর সঙ্গে কথা বলার জন্য সাক্ষাতের সময়ও চেয়েছেন। বিদ্রোহী শিবিরের বেশ কয়েকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে খবর। যদিও সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য বিক্ষুব্ধ শিবিরের কারা রাজ্য সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তা জানা যায়নি। সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, দলের সাংগঠনিক বিষয়ে কোনও সমস্যা থাকলে দলের অভ্যন্তরে রাজ্য সভাপতির সঙ্গে কেউ কথা বলতেই পারেন।
বিদ্রোহী শিবির সূত্রে খবর ছিলই, নতুন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁদের প্রতি খুব একটা কড়া মনোভাব নিচ্ছেন না। কারণ এটাও সকলে বুঝতে পারছেন যে শাসক শিবিরের দু-তিনজন নেতা, বিশেষত যাঁরা তৎকালীন বিজেপি, তাঁরা সুকান্তর কাঁধে বন্দুক রেখেও নিজেদের রাজনীতি করছেন। এতে অপ্রিয় হচ্ছেন সুকান্ত। সভাপতিকে লোকের কাছে অপ্রিয় করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির অঙ্কে খেলছেন এই দুই-তিনজন নেতা। আর সবচেয়ে বড় বিষয়, বিদ্রোহীদের ক্ষোভ সুকান্তর বিরুদ্ধে নয়। ভদ্র ও শিক্ষিত মানুষ হিসাবে পরিচিত বালুরঘাটের সাংসদের গ্রহণযোগ্যতা সকলের কাছেই রয়েছে। অন্য কয়েকজন নেতা তাঁর কাঁধে বন্দুক রেখে তাঁকে অপ্রিয় করেছে। আর দলের বিদ্রোহীদের ক্ষোভটা যে দলের শাসক শিবিরের অন্য তিন—চারজন নেতার বিরুদ্ধে প্রথমে সুকান্ত মজুমদার এটা বুঝতে পারেননি।
দলের একাংশের কথায়, মাস দুয়েক আগে রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব নেওয়া সুকান্তবাবুর পক্ষে দলের ভিতরকার অনেক কিছু না জানাই স্বাভাবিক। দলের একাংশের কথায়, বর্তমানে সমস্ত বিষয়টি বোঝার পর সুকান্ত এবার সরাসরি কথা বলতে চাইছেন বিক্ষুব্ধ শিবিরের সঙ্গে। মনে করা হচ্ছে এতে ভুল বোঝাবুঝি কিছুটা মিটবে।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক শীর্ষনেতা মনে করছেন, দলে যে ক্ষোভ—বিক্ষোভ চলছে তা রাজ্য নেতৃত্বকে অবিলম্বে বিদ্রাহীদের সঙ্গে বসে মিটিয়ে নেওয়াই ভাল। বিক্ষুব্ধদের ডেকে কথা বলা উচিত রাজ্য বিজেপির শাসক শিবিরের। বিক্ষুব্ধ শিবিরের এক নেতা এদিন জানিয়েছেন, রাজ্য সভাপতি আলোচনায় ডাকলে নিশ্চয়ই যাব। তবে সেই বৈঠকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর থাকা চলবে না।
অন্যদিকে, বঙ্গ বিজেপির এক বিদ্রোহী নেতা রীতেশ তিওয়ারিকে শুক্রবার দিল্লিতে দেখা যায় সারাক্ষণ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ঘুরতে। দিলীপবাবু দিল্লিতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় আবার আবার কলকাতায় ফিরে এসেছেন। দিলীপবাবুর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় রীতেশকে। এমনকী, পার্টি অফিসেও দু’জনে একসঙ্গে যান বলে খবর। তার পরই খবর রটে, দিল্লি কোনও একজন সাধারণ সম্পাদককে বাংলায় পাঠাতে পারে দলের বিদ্রোহের আগুন নেভানোর উদ্দেশ্যে।
Be the first to comment