চিরন্তন ব্যানার্জি :- ২২ জুলাই, অর্থাৎ সোমবার থেকে শুরু হতে চলেছে ১৮ তম লোকসভার প্রথম বাজেট অধিবেশন। আর তার আগেই শরিকদের আর্থিক সাহায্যের চাপে হিমশিম খাচ্ছে শরিক নির্ভর এনডিএ সরকার। বিজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো একদা পদ্ম-ঘনিষ্ঠ দলগুলিও চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি সরকারের উপর। বাজেট অধিবেশনের আগের দিন সর্বদলীয় বৈঠকে এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক নীতীশ কুমারের জেডিইউ বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদার দাবি জানিয়ে সরব হয়। এ প্রসঙ্গে জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী বলেন, “বিহার বিভাজনের ফলে সমস্ত খনিজ সম্পদ ঝাড়খণ্ডে চলে গিয়েছে। ঠিক তেমনি অন্ধ্রপ্রদেশের বিভাজনের পরে সমস্ত আয়ের উৎস তেলঙ্গানায়। ফলে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারিয়েছে এই দুই রাজ্য। তাই দু’টি রাজ্যের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ মর্যাদা বা আর্থিক সাহায্য পাওয়া উচিত।” জেডিইউয়ের তরফ থেকে এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় ঝা। তিনি বলেন, “বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদা চেয়ে নীতীশ কুমার দীর্ঘ সময় ধরে সরব। আজও কেন্দ্রের কাছে বিশেষ মর্যাদা চেয়ে সরব হয়েছে জেডিইউ। যদি সরকারের ওই মর্যাদা দিতে কোনও নীতিগত আপত্তি থাকে, তা হলে যেন বিহারকে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হয়।”
জেডিইউয়ের পাশাপাশি, এদিনের বৈঠকে বিশেষ আর্থিক সাহায্য চেয়ে শরব হয় একদা পদ্ম শিবিরের ঘনিষ্ঠ বিজেডি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলি। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে বিজেডি নেতা সম্মিত পাত্র প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডার উপস্থিতিতে বলেন, ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ওড়িশাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু গত ১০ বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি। তাই বিজেডি-র দাবি, এখন কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপির সরকার। তাদের উচিত ওড়িশাকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। প্রসঙ্গত, এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির অন্যতম আরেক শরিক অন্ধ্রপ্রদেশের শাসক দল টিডিপি। অর্থাৎ চন্দ্রবাবু নাইডুর দল। যদিও তাঁরা এদিনের বৈঠকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। সেই নিয়ে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কটাক্ষ করে বলে, বাজেটের আগেই টিডিপি-র সঙ্গে দেনাপাওনা সেরে ফেলেছে বিজেপি। তাই চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল চুপ। অন্যদিকে অন্ধ্র রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস আজ অন্ধ্রের জন্য বিশেষ মর্যাদার দাবি জানিয়েছে। দলীয় সাংসদ বিজয় সাই রেড্ডি বলেন, “সব মিলিয়ে সরকারের কাছে আটটি বিষয়ে দাবি করা হয়েছে।” অন্ধ্রের জন্য বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা, কেন্দ্রীয় করের অংশ কমানো, বিশাখাপত্তনমে ইস্পাত কারখানার বেসরকারিকরণ বন্ধ করা, রাজ্যের রেল প্রকল্পের জন্য জমি অনুমোদন ছাড়াও রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবনতি হলে প্রয়োজনে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করেছেন সাংসদ বিজয় সাই রেড্ডি। উল্লেখ্য, জেডিইউ এখনও সরকারের থেকে কোনও প্রতিশ্রুতি না পাওয়ায় বারংবার সরব হচ্ছে।
Be the first to comment