রোজদিন ডেস্ক :- আজ মঙ্গলবার বনগাঁয় সভা করলেন মূখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বিজেপির বিজ্ঞাপনী প্রচার নিয়েও কটাক্ষ করলেন তিনি।
একাধিক প্রকল্পের টাকা দিয়েছে বলে কেন্দ্র মিথ্যাচার করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করে বলেছেন, এইসব গ্যারান্টি আদতে ফোর-টোয়েন্টি গ্যারান্টি।
বনগাঁর সভামঞ্চ থেকে এদিন নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, ”টিভি খুললেই ওঁর ছবি, ইউটিউব খুললেই ওঁর ছবি। কাগজে এমনকী ঘুমের মধ্যে ছবি, আতঙ্ক হয়ে গেছে। আবার আমার নামে একটা নাম বলছে। আমার নামটা কেন পছন্দ জানি না, সারাক্ষণ তো গালাগাল দিয়ে বেড়ায়।”
মমতার কথায়,” বিজেপির বিজ্ঞাপনে এক মাকে ডেকে তার মেয়ে বলছে,’চলো বিজেপিকে ভোট দিয়ে আসি। ওরা আমাদের জল দিয়েছে।’ এ বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতার বক্তব্য, ৭০ শতাংশ জলদিয়েছে রাজ্য সরকার। বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পে ৭০ শতাংশ টাকা, জমি এবং রক্ষণাবেক্ষণ সব রাজ্য সরকার করে বলে জানিয়েছেন মূখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলছেন, ”সব চুরির টাকা। দেশের টাকা লুটেছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি, পকেটে ভরেছে। সেই টাকা দিয়েই আজ বিজ্ঞাপন করে বেড়াচ্ছে।” পিএম কেয়ারের টাকার হিসেব কোথায়, প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। এই প্রেক্ষিতেই মোদীকে ‘গ্যারান্টিবাবু’ বলে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, বিনাপয়সায় বিদ্যুৎ দেওয়ার দাবি থেকে শুরু করে বিনামূল্যে গ্যাসের প্রতিশ্রুতি সবই ভুয়ো, মিথ্যে।
ইন্ডি জোট ৩০০ থেকে ৩১৫টি আসন পাবে এই ভোটে। দিল্লিতে সরকার গড়বে তারাই। আর বিজেপি টেনেটুনে ১৯৫ পেতে পারে। ২০০ আসন পর্যন্ত ছুঁতে পারবে না।
মঙ্গলবারের সভা থেকে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ”আগেরবার আঁচ করেছিলাম মোদী আসছেন। কিন্তু এবার হাওয়া বদল হচ্ছে। মানে ৪২০ গ্যারান্টি বদল হচ্ছে। কেউ ভয় বলতে পারছে, কেউ পারছে না। ১৯৫ থেকে ২০০ আসন পাবে বিজেপি। ইন্ডি জোট পাবে ২৯৫ থেকে ৩১৫টি আসন।”
মমতার খোঁচা দিয়ে আরো বলেন, “বিজেপি বলছে ৪০০ পার, কিন্তু আসলে হবে পগার পার।”
মঙ্গলবার হুগলির শ্রীরামপুরের সভা থেকে মমতা বলেন, “রোজ বলছে তৃণমূল চোর! কার পকেটে চুরি করেছে জিজ্ঞেস করুন। একটা হাওয়া তুলে দিয়েছে। চুরিটা করেছে, প্রমাণটা কোথায়?”
কথায় কথায় তৃণমূলকে চোর বলা! এবার আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খানিক থেমে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “আমি তো কোর্টে যাচ্ছি, মানহানির মামলা করব। আমি এবার ছাড়বার পাত্রী নই। আঁটসাঁট করে ধরব। রোজ খবরের কাগজে মিথ্যে কথা বলছে। জীবনে এককাপ চাও কার কাছ থেকে খাইনি, আমাকে বলছে চোর!”
এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমেকও তিনি ছাড়েন নি। তাঁর কথায়, “সংবাদপত্রের মালিকগুলো সব বিজেপির কাছে নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে। কাল যখন গদি ওল্টাবে তখন এরাই সবার আগে পাল্টাবে!”
এবারের লোকসভা ভোটে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেত্রী।
রাজ্য ধরে ধরে হিসেব দিয়ে মমতা বলেন, “বিহারে, উত্তরপ্রদেশে, রাজস্থান হারছে। কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকেও জিরো। বাংলাতেও জিরো। দিল্লি, পাঞ্জাবেও হারছে। ভোটটা তাহলে পাবে কোথা থেকে? আকাশ থেকে কী ভোট পড়বে? কাজ করতে হয়। কোনও কাজ করেনি। এবারের ভোটে তাই বিজেপির শোচনীয় পরাজয় হবেই।”
মনে করিয়েছেন, “২০০৪ সালে কেউ ভাবেনি অটলজী হেরে যাবেন। কিন্তু তাঁকে হারতে হয়েছিল। কারণ, মানুষ হারিয়ে দিয়েছিল।”
তৃণমূল নেত্রী আরো জোর গলায় বলেন, “বিজেপিকে তো এবার আমরা রাজ আসনে বসিয়ে দেব! এবার আমরা দেখতে চাই, মোদী যাক, দেশটা থাক।”
হুগলিতে এবারেও তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে কল্যাণের প্রশংসা করে মমতা বলেন, “কল্যাণ তো একাই একশো। ওর গলার আওয়াজ শুনেছেন তো! ও একাই বিজেপির ৩০০ জনকে বুঝে নিতে পারে! তাই সংসদে ওর যাওয়াটা জরুরি।”
Be the first to comment