বৃষ্টির পর শুকনো শহরের ওয়াটার পকেট গুলো, অন্যবারের দৃশ্য উধাও

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি :- এবারের বর্ষায় কলকাতার রাস্তা ঘাটের দৃশ্যটা অনেকটাই আলাদা। হালকা বৃষ্টিতেই শহরের রাস্তা ঘাট জলের তলায় নগরবাসীর চিরাচরিত এই ছবিটাই দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু গত দু’দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির পরেও সেইভাবে জল জমতে দেখা গেলো না মহানগরের রাস্তায়। যদিও হাতে গোনা কিছু কিছু জায়গায় জল জমে আছে, সেখানে কলকাতা পৌরনিগমের নিকাশি ব্যবস্থা পুরোদস্তুর কাজ চালাচ্ছে। কলকাতার শহরতলি ভিআইপি রোড, কলেজ মোড়, সেক্টর ফাইভ, বিধান নগরের একাংশ জলমগ্ন৷
অন্যদিকে, কলকাতা পুরনিগম এলাকার ওয়াটার পকেট হিসেবে চিহ্নিত যেসব রোড যেমন, বড়বাজার, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট, কলুটোলা স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, আমহার্স্ট স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট এমনকী স্ট্র্যান্ড রোডও শুকনো৷
প্রসঙ্গত, কলকাতায় শুক্রবার পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২১৮ মিলি মিটারের বেশি৷ সেখানে শনিবার ভোর ৪টে থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫৬০ মিলিমিটার ৷ গতকাল অঝোরে বৃষ্টির পর আজ ভোর থেকে ভালো বৃষ্টি হয়েছে ৷ বড় রাস্তাগুলির সঙ্গে অলিগলিতে সামান্য জল জমলেও তা দ্রুত নেমে গিয়েছে ৷
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কাল যে জল জমবে না, এই গ্যারান্টি আমিও দিচ্ছি না। কিন্তু মেয়র পারিষদ তারক সিং এবং নিকাশি দফতর, এরা এত ভালো কাজ করেছে, যে সাধারণ জল বেরিয়ে যাচ্ছে৷ কয়েকটা জায়গা যেমন পাতিপুকুর, বেহালায়, ১২৭ ও ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ চলছে৷ কিন্তু সার্বিক যে জল জমার পরিস্থিতি, তা অন্যবারের তুলনায় অনেকটাই ভালো৷”
যদিও, কলকাতা পুরনিগম ও দক্ষিণ দমদম মিউনিসিপ্যালিটি সীমানা পতিপুকুর আন্ডার পাসের ছবি অন্য বর্ষার মতোই জলমগ্ন থাকলেও জলের পরিমাণ অন্যান্য বারের তুলনায় অনেকটাই কম৷ কাঁকুড়গাছি রেল ব্রিজের তলায় বেশ খানিক জল জমে আছে৷ পিটিএসের সামনে জল থাকলেও তা ধীরে ধীরে নেমে গিয়েছে।
কলকাতা পুরনিগমের সংযুক্ত এলাকা বেহালা ও জোকার কিছু অংশে সামান্য জল জমে আছে ৷ এখনও বৃষ্টি পড়ছে। ফলে সার্বিক ভাবে কলকাতার জলছবির যে বদল হয়েছে, সেটা বললে ভুল হয় না৷ এবার তৎপর পুরনিগমের নিকাশি বিভাগও৷
অন্যদিকে, গলফ গ্রিন সহ বেশ কিছু এলাকায় যেখানে যেখানে জল দাঁড়িয়ে আছে সেই সব এলাকায় পোর্টেবল পাম্প চালিয়ে এলাকার জল নামানোর কাজ করেছে পুরনিগম৷
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে খবর, শনিবার ভোর ৪টে থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পামার বাজারে ৪১.৬ মিলিমিটার, ঠনঠনিয়া ২৪ মিলিমিটার, কুলিয়া ট্যাংরা ৩২ মিলিমিটার, পাগলা ডাঙ্গা ২১.৪ মিলিমিটার, চিংড়িঘাটা ৪৯ মিলিমিটার, মানিকতলা ৩৩ মিলিমিটার, দত্তবাগান ৩২ মিলিমিটার ৷ বীরপাড়া ২৭ মিলিমিটার, মার্কাস স্কোয়ার ১৫ মিলিমিটার, ধাপ ২৪ মিলিমিটার, তপসিয়া ৩৫ মিলিমিটার, উল্টোডাঙা ৪২ মিলিমিটার, কামদহরি ১২ মিলিমিটার, পাটুলি ১১ মিলিমিটার ও বালিগঞ্জ 36 মিলিমিটার, মোমিনপুর ১৪ মিলিমিটার, চেতলা ২৬ মিলিমিটার, যোধপুর ২৬ মিলিমিটার, কালীঘাট ২১ মিলিমিটার, জোকা ১৯ মিলিমিটার, গার্ডেনরিচ ৯ মিলিমিটার৷ এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা লাগাতার নিকাশি লাইনে পলি তোলার কাজ করেছি। বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৪০০-র বেশি পোর্টেবল পাম্প আছে৷ ভাটা আসতেই লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছে৷ ফলে শহরের সিংহভাগ জায়গায় জল জমেনি৷ বেশ কিছু অংশে জল জমলেও সেটা দ্রুত নেমে গিয়েছে।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*