মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুতে কর্মবিরতির ঘোষণা আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারদের

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুতে উত্তাল হাসপাতাল চত্বর। মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রতিবাদে হাসপাতালের রেসিডেন্স ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে কর্মবিরতি ডাক দেওয়া হয়। সদস্যেরা জানিয়েছেন, বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্ত-সহ তাঁদের বাকি দাবি যত ক্ষণ পর্যন্ত মানা হবে না, তত ক্ষণ বন্ধ থাকবে কাজ। শুধু হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। হাসপাতালের ভিতরে বিক্ষোভ দেখায় চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন। তারা ময়নাতদন্তের জন্য চিকিৎসকের দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত তাঁর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্য হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ারাও আরজি করে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন। হাসপাতালের সুপার ‘সত্য প্রকাশ্যে’ আনার দাবি তুলেছেন। ঘটনার তদন্তে গিয়েছেন খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। হাসপাতালে পৌঁছেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি এবং বাম সংগঠন এআইডিএসও। হাসপাতালের ঘরে-বাইরে এই বিক্ষোভের জেরে বিঘ্নিত চিকিৎসা পরিষেবা। বিপাকে পড়েছেন বহু রোগী এবং তাঁদের পরিবার।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় মৃত মহিলা চিকিৎসকের দেহ। অভিযোগ ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। এরপরই হাসপাতালের ভিতরে বিক্ষোভ দেখায় জুনিয়র ডাক্তার এবং চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যেরা। চার তলার যে সেমিনার হলে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, সেখানে জড়ো হন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষও উপস্থিত হন ওই সেমিনার হলে। তবে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুকে ঘিরে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করতে নারাজ।
এদিন হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ বলেন, ‘‘পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্ত হবে। চিকিৎসকের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। সেই ময়নাতদন্ত করার ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে। আমরাও চাই, সত্য প্রকাশ্যে আসুক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ রয়েছে, ফরেন্সিক দল রয়েছে। তদন্ত চলছে। মন্তব্য করা যাবে না। তদন্ত চলছে।’’
উল্লেখ্য, মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর পরই হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা নিয়ে উঠল প্রশ্ন।
রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন সংগঠনের সদস্য আরিফ আহমেদ লস্কর জানিয়েছেন, মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্ত করাতে হবে। ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত থাকবেন পাঁচ জন জুনিয়র মহিলা চিকিৎসক, পরিবারের সদস্য, বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করাতে হবে। আরজি করেই ময়নাতদন্ত করাতে হবে। এখনই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তদন্ত কমিটি তৈরি করতে হবে। এই দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। তবে ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে মন্তব্য করেননি আরিফ। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনাটি সেমিনার রুমে হয়েছে যা সন্দেহজনক। তবে মন্তব্য করব না। তদন্ত চলছে।’’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*