মেয়ের বিয়ের কেনাকাটা সেরে আর বাড়ি ফেরা হলো না পরিমল বাবুর। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো তাঁর। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার নাকাশিপাড়া থানা এলাকার বেথুয়াডহরী হাটতলা বাজারে।
জানা গিয়েছে, বেথুয়াডহরীর শম্ভু নগরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের পরিমল রায়-এর মেয়ের বিয়ের তারিখ ছিল রবিবার। আর সেই মতোই প্রস্তুতি ও সেরে ফেলেছিলেন পরিমল বাবু। লকডাউন আবহে তেমন ঘটাকরে প্রস্তুতি নিতে না পারলেও আয়োজনে ত্রুটি ছিল না। প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা সহ মাইক,সব কিছুর ই ব্যাবস্থা করেছিলেন পরিমল বাবু। জুয়েলারী থেকে স্বর্ণালঙ্কার বায়না করা থাকলেও শুধু বাড়িতে আনার কাজটা বাকি রেখেছিলেন তিনি।
রবিবার সকালে সেইমতো নিজের ভাইপোকে সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইক চেপে স্বর্ণালঙ্কার আনতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বেথুয়াডহরী বাজারে। জুয়েলারী থেকে অলঙ্কার সহ আরো কিছু বিবাহ সামগ্ৰী স্থানীয় বাজার থেকে কেনাকাটার পর ৩৪ নং জাতীয় সড়কের হাটতলা বাজারের রাস্তা পারাপারের সময় কৃষ্ণনগর-তারাপীঠ গামী একটি বেপরোয়া বাস পেছন থেকে ধাক্কা মারে বাইকে। ঘটনাস্থলেই বাইক থেকে ছিকটে পড়ে যান দুজনেই। মাথায় ভীষন চোট পান পরিমল বাবু। তড়িঘড়ি স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুতর আহত পরিমল বাবু সহ তার ভাইপোকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় বেথুয়াডহরী গ্ৰামীণ হাসপাতালে। তবে চিকিৎসক পরিমল বাবুকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
এরপর ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ এবং ঘাতক বাসটি সহ বাসের চালককে আটক করে। আকস্মিক এই নির্মম দুর্ঘটনায় তৎপর হয়ে ওঠে গ্ৰামবাসী সহ পাত্র পক্ষ। স্থানীয় বেথুয়াডহরীর পাঠিকাবাড়ি গ্ৰামে ঠিক হয়েছিল বিয়ের সম্বন্ধ।
পরে পাঠিকা বাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বৃথ্বীশ মজুমদারের মধ্যস্থতায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে দেহ ফেরার আগেই পাত্র-পাত্রীর দুই হাত এক করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। রেজিস্ট্রি বিবাহ আগেই সুসম্পন্ন হওয়ায় তেমন সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়নি ঠিকই কিন্তু এ বিয়েতে প্রাণ ছিলনা। নিয়ম রক্ষার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও সানাই বাজেনি, হয়নি প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানও।
Be the first to comment