শরিক তুষ্ট বাজেট’ বলে সংসদে চাঁচাছোলা ভাষায় বক্তব্য রাখলেন অভিষেক

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি :- মঙ্গলবার লোকসভায় তৃতীয় মোদী সরকারের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বুধবার থেকে সেই বাজেটের উপর বিতর্ক শুরু হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে এদিন বাজেট বিতর্কে অংশ নেন দলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিজেপির বাজেটকে শরিক তুষ্ট বাজেট বলে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “বেছে বেছে এবারের বাজেটে তিনটি রাজ্যকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত করা হয়েছে। এগুলি হল তেলেঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক। এটা কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়।  এই তিন রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে অবিজেপি দল। সেকারণেই এই বঞ্চনা।” তিনি স্পষ্ট বলেন, এই বাজেটের মাধ্যমে দেশবাসীকে প্রতারণা করা হয়েছে।’ শুধু তাই নয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘জো হমারা সাথ, হম উনকে সাথ’ মন্তব্য টেনেও কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেন অভিষেক।
এরপরই অভিষেক বলেন, ইংরেজিতে বাজেটে ৬টি অক্ষর রয়েছে। তারপর একেকটি অক্ষরের বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরেন তৃণমূলের সাংসদ।
তিনি শুরু করেন, “বি মানে বিট্রে। তার বিশ্লেষণে বলেন, ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি বলেছিল, আচ্ছে দিন। ১০ বছরের জমানায় মানুষকে ৪০ টাকা দিয়ে আলু কিনতে হচ্ছে, গ্যাসের দাম ১ হাজার টাকা! মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকটাই হচ্ছে বিজেপির আচ্ছে দিন।” এরপর তিনি বলেন, ইউ ফর আনএমপ্লয়মেন্ট। গত ১০ বছরে বেকারত্বে অতীতের ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে বিজেপি। ডি ফর ডিপ্রাইভ বা বঞ্চনা। দেশের নারী থেকে শিশু, সকলে এই ১০ বছরে বঞ্চিত হয়েছেন। এমনকী একুশের বিধানসভা ভোটে বাংলায় হারের পর থেকে বাংলার ১০০ দিনের প্রকল্প, আবাস যোজনায় টাকাও আটকে রাখা হয়েছে। জি ফর গ্যারেন্টি, আবার জি ফর ঘোটালা। গ্যারেন্টি মানে জিরো ওয়ারেন্টি।
এমন আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মাঝেই শাসক শিবির থেকে অভিষেককে থামাতে আওয়াজ ওঠে। পালটা আওয়াজ তোলে বিরোধী শিবির। এরপর তিনি বলেন “টি ফর ট্র্যাজেডি। এই সরকারের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হল কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে অপব্যবহার করা। বিরোধী দলের লোক হলেই মুখ বন্ধ করতে এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি, আমার স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা, আমার আইনজীবী কাউকে ছাড়া হয়নি। এজেন্সি দিয়ে আমার পুরো পরিবারকে বারেবারে হেনস্তা করা হয়েছে।” 
উল্লেখ্য, এদিন সংসদে তৃণমূল সাংসদ তাঁর বক্তৃতার মধ্যে কৃষক মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলতেই, তাঁকে থামিয়ে দিয়ে স্পিকার বলেন, “এই নিয়ে এর আগে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে।” অভিষেক প্রতিবাদ জানালে স্পিকার বলেন, “আমি স্পিকার। আমি বলছি আপনাকে শুনতে হবে।” তা শুনে টেবিল চাপড়াতে দেখা যায় শাসকদলের সাংসদদের। পালটা অভিষেক বলেন, “যারা তালি বাজাচ্ছে তাদের জন্য সাতশো কৃষক মারা গেছে। এরা একজনের জন্যও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন?” স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কেউ ৫০ বছর আগে নেহেরু জমানার প্রসঙ্গ তুলে কথা বললে আপনি চুপ থাকেন, আর আট বছর আগের নোটবন্দির প্রসঙ্গে বলতে গেলে আপনি থামিয়ে দেন।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*