শোক প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভা তুলকালাম, শুধু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নয় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হোক আর জি করের নির্যাতিতাকেও, বললেন শুভেন্দু

Spread the love

 

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নে বিল আনতে সোমবার থেকে দুইদিনের জন্য রাজ্য বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। আর বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের প্রথম দিনেই আরজি কর-কাণ্ডে তপ্ত অধিবেশন কক্ষ। প্রথম দিনে শোকপ্রস্তাবের পরই অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়া কথা ছিল। কিন্তু সেই শোকপ্রস্তাবে নাম ছিল কেবল প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। আরজি করের নির্যাতিতার বিষয়ে সেখানে কোনও উল্লেখ ছিল না। তা নিয়েই আপত্তি জানান বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি জানান, শোকপ্রস্তাবে বুদ্ধদেবের সঙ্গে আরজি করে নির্যাতিতার প্রসঙ্গও রাখতে হবে। আরজি কর-কাণ্ডের কথা যুক্ত করার দাবিতে অধিবেশন কক্ষে সরব হন শুভেন্দু। কিন্তু স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, আইনগত সমস্যা থাকায় নির্যাতিতার নাম দেওয়া সম্ভব নয়।
এরই মধ্যে তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে একপ্রস্ত তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। শুভেন্দু যখন স্পিকারকে কিছু বলতে উঠেছিলেন, তখন পূর্বস্থলির বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে বসার জন্য বলেন। শাসক ও বিরোধী বিধায়কদের তর্কাতর্কিতে প্রথম দিনেই তপ্ত হয় অধিবেশন। যদিও শেষ পর্যন্ত আরজি করের নির্যাতিতার নাম বা আরজি করের প্রসঙ্গ যুক্ত হয়নি শোকপ্রস্তাবে। প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেবের শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন স্পিকার। এর পর অধিবেশন সোমবারের মতো মুলতুবি হয়ে যায়। কিন্তু বিজেপি বিধায়কেরা এর পরও নিজেদের আসনে বসে থাকেন। দৃশ্যত অর্ধেক ফাঁকা অধিবেশন কক্ষেই বিজেপি পরিষদীয় দলের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন শুভেন্দু।
আরজি কর-কাণ্ডের কথা উল্লেখ করে অধিবেশন কক্ষেই এক মিনিট নীরবতা পালন করেন শুভেন্দু ও অন্য বিজেপি বিধায়কেরা। এরপর বিধানসভা চত্বরেই আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মৌন মিছিল করেন তাঁরা। পরে শুভেন্দু বলেন, “আমি বলেছিলাম ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে নিহত কর্মরতা চিকিৎসক উল্লেখ করুন। কিন্তু স্পিকার প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরা বুদ্ধবাবুকে সম্মান করি বলে প্রতিবাদ করে কিছু বলিনি। পরে আমাদের মতো করে প্রয়াত বোনকে সম্মান জানিয়েছি।” তিনি আরও জানান, যে হেতু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করা যায় না, তাই নির্যাতিতার নামোল্লেখ না করেই শোকপ্রস্তাবের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার তাতে রাজি হননি বলে দাবি শুভেন্দুর। এদিন মৌন মিছিলের পর বিরোধী দলনেতা বলেন, “মঙ্গলবার বিধানসভায় মাত্র দু’ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। আমাদের ৬০ মিনিট দেওয়া হয়েছে। আমি অল্প বলব, বাকি সব মহিলা বিধায়কেরা বলবেন।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের আগষ্ট মাসের ৩০ তারিখ কলকাতা পুরসভার অধিবেশনের শোক প্রস্তাবে আরজি করের নির্যাতিতার কথা না থাকায়, বিজেপির পৌর প্রতিনিধিরা সেই অধিবেশন বয়কট করে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করে, অধিবেশন কক্ষের বাইরে অবস্থানে বসে পরেন দুই বিজেপি পৌর প্রতিনিধিরা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*