প্রতিশ্রুতির ফানুস নয়, বিকল্পের লক্ষ্য নিয়ে যে দাবিগুলিকে সামনে রেখে সামনের লোকসভা নির্বাচনে সিপিআই(এম) বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠনের পথে সেগুলি হল:
১. সংবিধান-স্বীকৃত ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি ও গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ সুরক্ষিত রাখতে হবে।
২. কৃষককে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষি ফসল বিক্রির অধিকার দিতে আইন প্রণয়ন করতে হবে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য হতে হবে ফসলের মোট উৎপাদন মূল্যের চেয়ে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বেশি।
৩. শ্রমিকদের বিধিবদ্ধ ন্যূনতম মজুরি করতে হবে মাস প্রতি ১৮,০০০ টাকা এবং এই মজুরি’কে ‘ক্রেতা মূল্য সূচকের’ সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
৪. সর্বজনীন গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে সর্বাধিক ২ টাকা কিলো দরে পরিবার পিছু ৩৫ কিলো অথবা জনপ্রতি ৭ কিলো খাদ্যশস্যের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে হবে। বেসরকারি স্বাস্থ্যবীমা-প্রধান স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে হবে এবং স্বাস্থ্য খাতে সরকারী ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়ে দেশের মোট অভ্যন্তরীন উৎপাদন (জিডিপি)-র ৫ শতাংশ করতে হবে।
৬. সংসদ ও রাজ্য বিধানসভায় মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ করতে হবে।
৭. মহিলা এবং শিশুদের উপর হিংসার ঘটনা বন্ধ করতে সর্বাঙ্গীণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৮. বিদ্যালয় এবং উচ্চতর স্তরে সরকারী শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক বিস্তার এবং গুণগত মানোন্নয়নঘটাতে হবে; শিক্ষা খাতে সরকারী ব্যয়বরাদ্দ দেশের মোট অভ্যন্তরীন উৎপাদন (জিডিপি)-র ৬ শতাংশ করতে হবে; শিক্ষাব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িকীকরণ রদ করতে হবে এবং শিক্ষার গণতান্ত্রিক চরিত্র সুনিশ্চিত করতে হবে।
৯. কাজের অধিকারকে সাংবিধানিক অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে।
১০. কর্মহীনদের বেকার ভাতা দিতে হবে।
১১. সকল নাগরিকদের জন্য বৃদ্ধাবস্থায় মাসিক পেনশন সুনিশ্চিত করতে হবে। মাসিক পেনশন হবে হয় ন্যূনতম মজুরির অর্ধেক অথবা মাসিক ৬০০০ টাকা, এর মধ্যে যা বেশি।
১২. রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় বেসরকারিকরণ বন্ধ করতে হবে এবং প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, রেলওয়ে এবং অন্যান্য মৌলিক পরিষেবার বেসরকারিকরণ প্রত্যাহার করতে হবে।
১৩. তফশিলী জাতি ও আদিবাসীদের জন্য চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে বেসরকারী সংস্থাতেও।
১৪. ধনী ও কর্পোরেট মুনাফার উপর করবৃদ্ধি করতে হবে।
১৫. অতি-ধনী’দের ক্ষেত্রে সম্পদ কর ফিরিয়ে আনতে হবে এবং উত্তরাধিকার কর চালু করতে হবে।
১৬. দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভের ওপর আবার করের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৭. আংশিক তালিকা ব্যবস্থাসহ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
১৮. নির্বাচনী বন্ড বাতিল করতে হবে।
১৯. নির্বাচনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারী ব্যয়ে সহায়তার ব্যবস্থা চাই।
২০. বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত আরএসএস কর্মীদের অপসারিত করতে হবে।
২১. সাম্প্রদায়িক হিংসা মোকাবিলায় বিস্তারিত ব্যবস্থাসহ আইন প্রণয়নের দ্বারা ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সাম্প্রদায়িক হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।
২২. বেআইনী বিভিন্ন বেসরকারী সশস্ত্র বাহিনী এবং নজরদারি গোষ্ঠীগুলিকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং গণপিটুনির ঘটনা মোকাবিলায় যথাযথ আইন প্রণয়ন করতে হবে।
২৩. স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে সমস্ত সাম্প্রদায়িক বিষয়বস্তু অপসারণ করতে হবে।
২৪. আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে সংসদীয় অনুমোদন বাধ্যতামূলক করতে হবে।
২৫. ঔপনিবেশিক আমলের ভারতীয় পুলিস বিধি (আই পি সি)-র ১২৪ নম্বর ধারায় অন্তর্ভূক্ত রাজদ্রোহ আইন প্রত্যাহার করতে হবে।
২৬. ‘আফস্পা’ (আর্মড ফোর্স স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট ) আইন প্রত্যাহার করতে হবে।
২৭. জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার/সংশোধন করতে হবে।
২৮. বিধি/নিয়মাবলী থেকে মৃত্যুদণ্ড অপসারণ করতে হবে।
২৯. সমস্ত সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে আধার ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।(তথ্য সংগ্রহ: গণশক্তি. কম)
[category: লোকসভার লড়াই ]
Be the first to comment