প্রায় ১০ মাস অতিক্রান্ত। কোরোনা আবহে এখনও বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সব স্কুল। বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক মহলের একাংশ থেকে দাবি উঠছে, অবিলম্বে স্কুল খোলা হোক। কিন্তু, আজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাতে স্কুল কবে থেকে খোলা হবে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলল না। তবে, স্বল্প সময়ের নোটিসে স্কুল খোলার জন্য সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে এদিন জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্কুল খোলার প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা এটা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি । ইতিমধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে । তবে কোরোনার নতুন স্ট্রেন নিয়ে উদ্বেগের কথাও আজ উঠে এল পার্থবাবুর কথায় । বললেন, “খুলে দিলে তো হবে না । যারা খুলেছে তাঁরা বন্ধও করেছে । যারা খুলেছে তাদের কোরোনার নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে । পাশের রাজ্যেও তা হয়েছে । আমরা নির্দিষ্টভাবেই খুলব । আর যখন খুলব তার আগে স্বাস্থ্যবিধিকে রূপায়ণ করার জন্য যে সময়টুকু লাগে, সেই সময়টুকু আমরা ব্যবহার করছি । তারপরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে যে কোনও মূর্হূতে তা খোলা যাবে ।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমি মনে করি যে, পঠন-পাঠন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি । তার জন্য আমরা প্রযুক্তিগত দিক থেকে ব্যবস্থা নিয়েছি, শিক্ষকরা ঘুরে ঘুরে যতটুকু পারছেন সাহায্য করছেন। কিন্তু, মুশকিল হচ্ছে আমাদের শিক্ষার সঙ্গে স্বাস্থ্যটাকেও জড়িয়ে রাখতে হবে। আমরা খুলে দিলাম আর তাঁরা আক্রান্ত হলেন, সেটা যেমন হওয়া একেবারেই কাম্য নয়, তেমনই পঠন-পাঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোলা দরকার। আমরা যা যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা ইতিমধ্যেই নিয়েছি। পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক করে দিয়েছি। অনলাইন পঠন-পাঠন ব্যবস্থা চালু আছে। রেডিয়ো, টিভি বা ফোনের মাধ্যমে পঠন-পাঠনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত দিক থেকেই আমরা ব্যবস্থা রাখছি।
উল্লেখ্য এখনও পর্যন্ত দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে স্কুল আংশিকভাবে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, সিকিম ও মহারাষ্ট্রের বেশ কিছু জেলায় ক্লাস নাইন থেকে ক্লাস টুয়েলভের পড়ুয়াদের জন্য ডিসেম্বর থেকেই স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে । ১ জানুয়ারি থেকে কর্নাটকে ক্লাস টেন থেকে টুয়েলভের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে গেছে । বিহারে ৪ জানুয়ারি থেকে ক্লাসরুমগুলিতে অর্ধেক সংখ্যক পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে । আগামীকাল থেকে রাজধানীতেও ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে যাচ্ছে । এখন বাংলায় কবে থেকে ফের স্কুলের স্বাভাবিক পঠনপাঠন শুরু হবে, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজ্যের শিক্ষকমহল।
স্কুল খোলার বিষয়ে কোনও স্পষ্ট দিকনির্দেশ না দিলেও সাঁওতাল মাধ্যমের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বড় ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী । তিনি বলেন, “আমরা সাঁওতালি ভাষার যে ৪৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছি তা ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। পরীক্ষার দিনক্ষণ দিয়ে দিয়েছি। ২২ টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে । এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে অলচিকিতে শিক্ষক নিয়োগের যে বহুদিনের দাবি তা পূরণ হবে ।
অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বলেছি, কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যেন তাঁরা ব্যবস্থা গ্রহণ করে । লোকে মিথ্যা অপপ্রচার করে বিক্ষোভ করার অজুহাত খুঁজছে । সেটা সঠিক নয় । কোর্টের রায় মেনে ১৬ হাজার ৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াও শেষ হয়ে যাবে । প্রাথমিক টেটের যে প্রক্রিয়া বাকি আছে, আড়াই লক্ষ আবেদনকারীর পরীক্ষা হবে ৩১ জানুয়ারি।
Be the first to comment