হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল তৃণমূল। ভাটপাড়া পুরসভা পুনর্দখলে জোর ধাক্কা খেল শাসক দল। অনাস্থা প্রস্তাব নোটিশ খারিজ করে দিলেন বিচারপতি অরিন্দম সিনহা। জট কাটল না ভাটপাড়া পুরসভার৷ আজ বৃহস্পতিবার সকালে অনাস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তৃণমূল৷ যদিও ভোটে বিজেপি যোগ দেয়নি৷ উল্টে বিজেপি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়৷ কিন্তু আদালত ভাটপাড়া পুরসভায় অনাস্থা ভোট-সহ গোটা প্রক্রিয়া খারিজ করে দিল৷ ফলে ভাটপাড়া নিয়ে বড় ধাক্কা খেল তৃণমূল৷
দুপুর দুটোর সময় এজি আদালতে জানান যেখানে ১৫ দিনের মধ্যে মিটিং ডাকা নিয়ম, সেখানে তিনি কিভাবে ২০ জানুয়ারি তিনি অনাস্থা মিটিং ডাকলেন? কোর্টে চেয়ারম্যান নিজেও মামলা করে আজকের মিটিং চ্যালেঞ্জ করেন নি? আদালতে প্রশ্ন এজির।
যদিও মামলাকারীর পক্ষের বিজেপি আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন চেয়ারম্যানের নোটিশকে চ্যালেঞ্জ না করে কিভাবে তিন তৃনমুল কাউন্সিলর নতুন করে মিটিং ডাকলেন? সরকার কেন এই মামলা লড়ছেন, প্রশ্ন বিকাশ বাবুর।
বিকেল ৪ টের সময় ফের শুরু হয় ভাটপাড়া পুরসভা মামলার শুনানি যেখানে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, একজন পুরপ্রতিনিধি’র ভোট দেওয়ার অধিকারী। সেটা পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন হোক বা অপসারণ। কিন্তু তাঁর সেই আইনি অধিকার নেই যে নির্বাচিত চেয়ার ম্যানের বিরুদ্বে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন বা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। তিনি আরও বলেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর নির্বাচিত চেয়ার ম্যান একটি মিটিং করবেন সেটা চিঠি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে।
সেই সময় টাও পেরিয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে ভাইস চেয়ারম্যান একটি নোটিশ জারি করতে পারেন সেটার মেয়াদ ৭ দিন। সেই সময়টা ও যদি পার হয়ে যায় তাহলে তিন জন কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্বে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন। এবং ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে পারেন যা ভাটপাড়া পুরসভা ক্ষেত্রে করা হয়েছে এই বিষয়ে একাধিক মামলায় রায় আদালতের কাছে তুলে ধরেন তিনি।
এদিন সকাল থেকে ভাটপাড়া পুরসভায় ঘিরে ছিল কড়া নিরাপত্তা। মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশও। ভোট শেষে সবুজ আবির খেলায় মেতে উঠেছিল তৃণমূল৷ ভাটপাড়া পুরসভায় ৩৫ আসনের মধ্যে একটি আসন ছিল সিপিএমের। বাকি ৩৪ আসনের মধ্যে ১৮ জন কাউন্সিলর তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন৷ বাকি কাউন্সিলর বিজেপির৷ বৃহস্পতিবার বিজেপির কোনও কাউন্সিলর ভোট দিতে আসেননি। ফলে ১৯-০ ভোটে ভাটপাড়া পুরসভা পুনর্দখল করে শাসক দল।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কিছুক্ষণ সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি অরিন্দম সিনহা বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়, তা বেআইনি। তা খারিজ করা হচ্ছে। এরপর রাজ্যের পুর আইন অনুযায়ী সমস্ত প্রক্রিয়া এগোবে।
এদিন, বেআইনিভাবে অনাস্থা ভোটের অভিযোগ তুলে ভোট প্রক্রিয়াতেই অংশ নেয়নি বিজেপি। বেআইনি অনাস্থা ভোটের অভিযোগে হাইকোর্টেও মামলা দায়ের গেরুয়া শিবিরের।
এদিন অনাস্থার পর রাজ্যের একমাত্র পুরসভা ভাটপাড়া হাতছাড়া হয়ে যায় বিজেপির। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে উপস্থিত ১৯ জন কাউন্সিলরের সবাই তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেন। ভাটপাড়া পুরসভায় বর্তমানে ৩২ কাউন্সিলর রয়েছেন।
Be the first to comment