রোজদিন ডেস্ক :- হাথরাসে এই মৃত্যু কাণ্ডে এত মানুষের লাশের ভিড়ে ধর্মগুরু ছিলেন পলাতক। সেই ধর্মগুরু সুরজপাল সিংহ ওরফে ভোলে বাবার ‘সৎসঙ্গে’ পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ‘প্রকাশ্যে’ এলেন সেই ভোলে বাবা। দু’মিনিটের একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে তিনি বার্তা পৌঁছে দিলেন সকলের কাছে।জানালেন, সে দিনের ঘটনায় তিনি গভীর ভাবে ব্যথিত।
২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের সেই ভিডিয়োতে তাঁকে হাথরসকাণ্ড নিয়ে শোকপ্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে। ভোলে বাবা বলেছেন, ”২ জুলাই যা ঘটেছে, তার পর আমি গভীর ভাবে ব্যথিত। প্রভু আমাদের এই কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে যাওয়ার শক্তি দিন। প্রশাসনের উপর আস্থা রাখতে হবে। আমার বিশ্বাস, যাঁরা এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন, যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁদের শাস্তি হবে। আমি আমার উকিল এপি সিংহের মাধ্যমে মৃতদের পরিবার এবং আহতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কমিটির সদস্যদের অনুরোধ করেছি।”
উত্তরপ্রদেশের হাথরসে গত ২ জুলাই ধর্মীয় জমায়েতের আয়োজন করেছিলেন ভোলে বাবা। তার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সৎসঙ্গ’। প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছিল সেখানে। এর আগেও একাধিক বার এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন তিনি করেছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষের জমায়েত হয় প্রতি বারই। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ‘সৎসঙ্গ’ চলাকালীন বাবাকে প্রণাম করার জন্য আচমকা হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কিতে কয়েক জন পড়ে যান। এর পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যা কয়েক মিনিটের মধ্যে বিপর্যয়ের আকার নেয়। পদপিষ্ট হয়ে সেখানে এখনও পর্যন্ত ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানতে পেরেছে, সুরজপাল আসলে স্বঘোষিত ধর্মগুরু। কাসগঞ্জে থাকতেন তিনি। ছিলেন কনস্টেবল। মূলত স্বল্প আয়যুক্ত দলিত পরিবার, যাঁরা মূলত দিনমজুর, শ্রমিক, সাফাইকর্মী, ছুতোরের কাজ করতেন, তাঁরাই হয়ে ওঠেন ভোলে বাবার ভক্ত। ঊর্মিলা নামে ‘বাবা’র এক ভক্ত সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘বাবা’ কারও কাছে টাকাপয়সা চাইতেন না। ‘সৎসঙ্গে’ আসা ভক্তদের কাছে তাঁর একটাই বার্তা ছিল, ‘মাছ, মাংস, ডিম, মদ খাবেন না।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক ভক্ত জানিয়েছেন, ‘সৎসঙ্গ’ চলাকালীন ভোলে বাবা বলেছিলেন, ‘আজ প্রলয় আসবে। তার পরই এই ঘটনা ঘটে।’ ঘটনার পর থেকে ভোলে বাবার সন্ধান মিলছিল না। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Be the first to comment